মনপুরায় পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ মে ২০১৭, ১৯:১৯
অ- অ+

ভোলার মনপুরা উপজেলায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরাঞ্চলসহ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন।

গত বছর অমাবশ্যার জোয়ারে মনপুরা ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ও পূর্ব সোনার চরের বেড়িবাঁধ দুটি ভেঙে যায়। এরপর গত এক বছরে এ বাঁধ দুটি সংস্কার না হওয়ায় ওই বাঁধের বেশ কয়েকটি জায়গা খুব সহজে জোয়ারে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।

জোয়ারের পানিতে অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এছাড়াও মনপুরার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলীচর, ঢালচর, চরনিজাম, চরশামসুউদ্দিনসহ আশপাশের চরগুলোর চারপাশে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় অমাবশ্যার জোতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানিতে মানুষের বসতভিটা ডুবে গেছে। রান্না বান্না করতে চরম দুর্ভোগ পড়তে হয়েছে প্লাবিত এলাকার মানুষের। মেঘনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত ৫টি গ্রামসহ চরাঞ্চলের ৩০ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি এলাকার মানুষ বর্তমানে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অমাবশ্যার জোয়ারে মেঘনার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবল জোয়ারে চৌমুহনী বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে মনপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম ও পূর্ব কুলাগাজী তালুক, কাউয়ারটেক চৌমহনী গ্রাম, পুর্বঈশ্বরগঞ্জ গ্রাম, হাজির হাট ইউনিয়নের পূর্ব সোনারচর গ্রাম, বেড়িবাঁধের বাহিরে চরজ্ঞান ও দাসের হাট গ্রাম তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। বর্তমানে তাদের কষ্টের যেন শেষ নেই।

হাজির হাট ইউনিয়নের পূর্ব সোনারচর গ্রামের মিজান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে পুরো গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানির তীব্রতায় রাস্তাঘাট সব ভেঙে যাচ্ছে। আমরা পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছি। দ্রুত ভাঙা বেড়িবাঁধটি সংস্কার করা না হলে বর্ষাকালে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে।

বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত চরজ্ঞানের ইদ্রিস মাঝি, মিজু মাঝিসহ আরও অনেকে বলেন, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের বেড়িবাঁধের বাইরের ঘরগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। ঢেউয়ের তোড়ে ঘরের খুঁটির গোড়ার মাটি সরে যায়। বাতাস হলে তাদের ঘরগুলো ঝুঁকে পড়বে। এজন্য তারা সবসময় আতঙ্কে রয়েছে। তাদের কোনো নিজস্ব জায়গা জমি নেই। বেড়ির ঢালে কোনো রকম ঘর উঠিয়ে বসবাস করছেন তারা।

বিচ্ছিন্ন কলাতলী চরের বসবাসকারী আব্দুল কাদের, রিপন বাজারের মহিউদ্দিন মাঝি, আবাসন বাজারের আয়শা বেগম ও আবু তাহের বলেন, তারা চরে খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারের পানি ওঠে তাদের বসত ঘরগুলো ডুবে যায় আবার ভাটা হলে পানি নেমে যায়। এভাবে সে চরের মানুষ কষ্ট করে দিন কাটায়। দ্রুত বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে বেড়িবাঁধের দাবিও করেন তারা।

প্লাবিত কুলাগাজি তালুক এলাকার মোশারফ বলেন, জোয়ার এলে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি এসে তাদের ঘর ও পুকুর ডুবে যায়। এতে করে তারা কষ্টে দিনাতিপাত করছে। দ্রুত ভাঙা বেড়িবাঁধ সংস্কার চায় তারা।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করার খবর পেয়েছি। তবে তিনটি পয়েন্টে রিং বেড়িবাঁধের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। শিপন চৌধুরী বাড়ির পূর্বপাশের ভাঙা বেড়িবাঁধ, কাউয়ারটেক চৌমহনী বাজার পশ্চিম পাশের ভাঙা বেড়িবাঁধ ও নাইবেরহাট সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ভাঙা বেড়িবাঁধ সামনে ১০ ফুট চওড়া ও ১০ ফুট উচ্চতার রিং বেড়িবাঁধের কাজ দ্রুত শুরু হয়েছে। হাজির হাট ইউনিয়নের পুর্বসোনারচর ভাঙা বেড়িবাঁধের টেন্ডার করার জন্য অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। চরাঞ্চলগুলোতে বেড়িবাঁধ নেই । আমরা এ বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/প্রতিনিধি/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কুমিল্লায় ৪ মামলায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গ্রেপ্তার
শেরপুরে পৃথক ঘটনায় দুই মরদেহ উদ্ধার
ঝিনাইদহে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল এইচএসসি পরীক্ষার্থীর
২৩ হাজার ইয়াবাসহ দুই মোটরসাইকেল আরোহী ট্রাফিক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা