সিরাজগঞ্জে ১৫ অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জুন ২০১৭, ২০:৪৭
অ- অ+

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গবাদি পশুর রোগ অ্যানথ্রাক্স মানবদেহে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৯ মে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের কালিয়াকৈর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গত ৪ জুন বিষয়টি জানতে পেরে উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে টিম গঠন করে আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে দুই দিন ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ সঠিক সময় গবাদি পশুকে ভ্যাকসিনের আওতায় না আনায় বারবার এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তরা হলেন, উপজেলার মোহনপুর মিলপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৪৫), খোকন আলীর ছেলে কামরুল (১৪), কালিয়াকৈর গ্রামের মমতাজ প্রামানিকের ছেলে শাহ আলম (৪০), আব্দুল করিমের ছেলে আকরাম আলী (৩০), আবুল হোসেনের ছেলে আরিফ (৩৫), আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মাসুদ (২৭), মুজা আকন্দের ছেলে আব্দুস সামাদ (৫০), শাহীন আলীর মেয়ে রিমা (৩), বাহের আলীর স্ত্রী ফাতিমা (৭০), রানা প্রামানিকের স্ত্রী রাশিদা (৩১), আবুল কাশেমের ছেলে হান্নান (৪০), হান্নান আলীর স্ত্রী জাহানারা (৩০), ছেলে বাদশা (১৪), শাহ আলমের মেয়ে সেতু (১০) এবং মাহমুদ আলীর ছেলে সিয়াম (১০)।

উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় এলাকা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের কালিয়াকৈড় গ্রামের হাজী আবুল হোসেনের অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামবাসীদের কাছে কমদামে বিক্রি করেন। এই মাংস কাটাকাটি ও নারা-চাড়ার সাথে জড়িতদের প্রথমে হাত-পা-চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো ক্ষত ও ঘায়ের মতো দেখা দেয়। ওই মাংস কাটা ও রান্নার কাজে জড়িতরা পাঁচ দিনের মধ্যেই অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হন। স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আক্রান্তরা জানতে পারে অ্যানথ্রাক্স রোগ হয়েছে।

গত ৪ জুন উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৫ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত করে। এরপর থেকেই মেডিকেল টিম গঠন করে আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে দুই দিন ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

এ ঘটনার পর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ গরুটির মালিককে রোগাক্রান্ত গরু জবাই করার কারণে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এলাকায় মাইকিং করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর থানার জন্তিহার গ্রামেও আরও বেশ কয়েকজন অ্যানথাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকালে উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাফরুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসক দল কালিয়াকৈর গ্রামটি পরিদর্শন করেন। আক্রান্তরা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাদের টিম আক্রান্ত এলাকায় চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

উপজেলার কালিয়াকৈর গ্রামের অ্যানথ্র্যাক্স আক্রান্ত শাহ আলম ও আকরাম আলী জানান, গরুর মাংস কাটা ও নারাচারা করার পর থেকে হাতে ফোসকা দেখা দেয়। একদিন পরে তা ঘায়ে রূপান্তর নেয়। আমার মেয়েকে তিন দিন স্থানীয় চিকিৎসকের ওষুধ খেয়ে ভালো হয়নি। পরে স্থানীয় স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ভর্তি করলে তারা চিকিৎসা দেয়। এখন আমার বাচ্চা কিছুটা সুস্থ।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৬ সালের মে মাসে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের চর কৈজুরী, পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা ও কায়েমপুর ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ পর্যাক্রমে ৭৮ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন। এছাড়াও ওই সময় জেলার কামারখন্দ ও উল্লাপাড়া উপজেলাতেও এ অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

(ঢাকাটাইমস/০৬জুন/প্রতিনিধি/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাইয়ের প্রথম শহীদ সাংবাদিক ঢাকাটাইমসের হাসান মেহেদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস হলেন আয়মন রাহাত
মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনে আগুন
জুলাই সনদ তৈরির প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ: প্রধান উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা