একটি পুরনো মানচিত্র দেখেই দেশ ভাগ করেন র‍্যাডক্লিফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৫:৪৯| আপডেট : ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৬:০৪
অ- অ+

সত্তর বছর আগে একজন ব্রিটিশ আইনজীবীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ শাসিত ভারতকে ভাগ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা ঠিক করার জন্য।

কাগজে কলমে ব্রিটিশ শাসিত ভারতকে ভাগ করতে মাত্র পাঁচ সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু যে সীমানা তিনি এঁকেছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের, তা আজো উপমহাদেশে বড় উত্তেজনার মূল কারণ। এই ব্রিটিশ আইনজীবীর নাম স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ।

ব্রিটিশ ভারতে তখন জনসংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন অনেকটা তড়িঘড়ি করেই ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।তবে একই সঙ্গে তারা মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ

১৯৪৭ সালের অগাস্টে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের উদ্ভব হয়। অন্যদিকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ছিল দুটি বড় প্রদেশ, যেখানে মুসলিম ও অমুসলিমরা ছিল প্রায় সমান সংখ্যক। এর একটি হলো পূর্ব দিকে বাংলা আর পশ্চিম দিকে পাঞ্জাব।

র‍্যাডক্লিফের দায়িত্ব ছিল এই দুটি প্রদেশের মধ্যে বিভক্তি লাইন টেনে দেয়া, যা ছিল অত্যন্ত জটিল কাজ। এ কাজটি করতে তাকে নির্ভর করতে হয়েছে কিছু অনড় উপদেষ্টা, একটি পুরনো মানচিত্র আর জনসংখ্যার ভুল চিত্র সম্বলিত তথ্যে।

শত বছর ধরে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে এমন কোন সম্প্রদায়কে সোজা লাইন টেনে বিভক্ত করার সুযোগ ছিল না। তখন এ নিয়ে উত্তেজনা ছিল চরমে এবং র‍্যাডক্লিফ নিজেও জানতেন যে এটা কতটা ঝুঁকির কাজ ছিল। তার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার কয়েকদিন পর।

এতে লাখ লাখ মানুষ স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপন শুরু করে যদিও তারা নিজেরাই জানত না যে তারা ঠিক কোন দেশের অধিবাসী হতে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার বিস্মিত হয়েছিলেন। ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ র‍্যাডক্লিফের আঁকা বিভক্তি লাইন যেটি পরে র‍্যাডক্লিফ লাইন নামে পরিচিতি পায় সেই লাইন অতিক্রম করতে হয় নিজের বসবাসের জন্য। শুরু হয় ধর্মীয় সহিংসতা, আর তাতে প্রাণ হারায় প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষ।

এটি ছিল একটি ভয়াবহ ট্রাজেডি যা এখনো রক্তাক্ত করে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ককে।

তবে সিরিল র‍্যাডক্লিফ দেশভাগ শেষ করে ভারত ছাড়ার আগেই পুড়িয়ে ফেলেন তার সব নোট। পুরস্কার স্বরূপ দেশে ফিরে তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে নাইট উপাধি পান।

তবে তার মনে কোন সন্দেহ ছিল না যে পাঞ্জাবি আর বাঙালিরা তার সম্পর্কে কি চিন্তা করবে বা তাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবে।

তিনি নিজেই বলেছেন, ‘অন্তত ৮ কোটি মানুষ আমাকে দেখবে ক্ষোভ নিয়ে।’

তবে স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ আর কখনোই ভারত ও পাকিস্তানে আসেননি।

সূত্র: বিবিসি

(ঢাকাটাইমস/২আগস্ট/এসআই)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাকসু নির্বাচন ঘিরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ৩ দাবি
এবার বিতর্কের মুখে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা ছাড়লেন বাংলাদেশি বংশ্দোভূত রুশনারা আলী
আজ বিশ্ব বিড়াল দিবস
এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা