মাদকবিরোধী অভিযানে নিহতের সংখ্যা দু’শো ছাড়াল

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০১৮, ০৮:০৮

দেশে গত প্রায় দুই মাস ধরে চলা মাদকবিরোধী অভিযানে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা দু’শো ছাড়িয়েছে। একটি মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে এই কথা বলা হয়েছে। খবর বিবিসির।

রবিবার গভীর রাতে কুষ্টিয়া ও ময়মনসিংহে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হন। পুলিশ দুইজনকেই মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করে বন্দুকযুদ্ধের যে বর্ণনা দিয়েছে, সেটি গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এ ধরনের ঘটনাগুলোর যে বিবরণ দেয়া হচ্ছে - তার চেয়ে আলাদা কিছু নয়।

আবার ঘটনার পর নিহতদের পরিবার যে দাবি করছে, সেটিও আগের অনেক ঘটনার মতোই। অর্থাৎ তাদের দাবি নিহতদের আগেই ধরে নেয়া হয়েছিল।

কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারি কোনো হিসাব না পাওয়া গেলেও মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে গত ১৫ মে থেকে ১৬ জুলাই রবিবার পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে ২০২ জন।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শিফা হাফিজার মতে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। তিনি বলেন, ‘এতো মানুষকে এতো অল্প সময়ে হত্যার নজির আর নেই। ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমরা সুষ্ঠু বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।’

কিন্তু এসব মৃত্যুর ঘটনায় কারা জড়িত কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিবরণই সত্যি কি না - সেটি এখনো জানা যায়নি। যদিও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হয় বলে বলা হয়েছে।

তবে কর্তৃপক্ষ যাই বলুন, এ অভিযানটি বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গত ২৬ মে টেকনাফের কাউন্সিলর একরামুল হক হত্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অডিও প্রকাশের পর।

এরপর বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারেও একরামুল হকের স্ত্রী আয়েশা বেগম তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেছিলেন।

পরে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্তের কথা বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, তদন্ত প্রতিবেদন এখনো তারা পাননি।

তবে শিফা হাফিজ বলছেন, এ ঘটনাতেই আসলে বেরিয়ে আসে বন্দুকযুদ্ধের নামে কী ঘটছে এবং তার মতে এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তুমুল শোরগোলে কমে আসে মৃত্যুর সংখ্যাও।

তিনি বলেন, ‘এটার পর যেহেতু মানবাধিকার কর্মী ও গণমাধ্যম সোচ্চার হয়েছিল সেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর ঘটনা তাই কমে এসেছিল।’

তবে সংখ্যায় কমলেও বন্ধ হয়নি বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা , একই কায়দায় অব্যাহত রয়েছে অভিযান। গত ১৫ মে থেকে এ অভিযানের এমন ব্যাপকতা চোখে পড়লেও অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল আসলে বছরের শুরু থেকে।

জানুয়ারি মাসের শেষ দিনে সংসদে বিরোধী দলের একজন সদস্য মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে বক্তব্য দিলে তখন সংসদে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী সেদিন থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের ঘোষণা দেন। পরে পুলিশ ও র‌্যাবের অনুষ্ঠানেও তার ভাষণে বিষয়টি উঠে আসে। এগারই মে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনেও মাদক নিয়ে সতর্ক করেন তিনি। মূলত এরপরই - অর্থাৎ মে মাসের মাঝামাঝি থেকে - ব্যাপক অভিযান শুরু করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কিন্তু এ অভিযান আদৌ কোনো সুফল এনেছে কি না - সেই প্রশ্নই তুলছেন আরেকজন মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন। তিনি বলেন, ‘এই অল্প সময়ে দুশো'র বেশি মানুষ নিহত হবার পরও মাদকের বিস্তার অব্যাহত রয়েছে। তাহলে এ অভিযানের লক্ষ্য কি শুধু মানুষ হত্যা করা?’

অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগেই জানিয়েছে যে, বাহিনীর কেউ মাদকে জড়িতে থাকলেও অভিযানের আওতায় তারাও থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে তৈরি করা তালিকায় যাদের নাম মিলে যাচ্ছে তাদেরই কেবল আটক করা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ক্রসফায়ারের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।–বিবিসি বাংলা

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ: আইএইএ প্রধানকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রেয়াতি সুবিধা বাতিলের প্রতিবাদ, রেলের ভাড়া বাসের চেয়ে কম রাখার দাবি

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন চালু, ৩ জেলায় সতর্কতা 

বাড়ল হজ ভিসার আবেদনের সময়

উপজেলা নির্বাচন: দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন আজ

ঝড়ের আশঙ্কায় সিলেট অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেত

পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইসির মনিটরিং টিম

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে: এডিবির আবাসিক প্রধান

থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :