বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতিতে বড় সুবিধাভোগী উত্তর-পূর্ব ভারত: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতিতে উত্তর-পূর্ব ভারতকে একটি বড় সুবিধাভোগী হিসাবে বর্ণনা করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি দাবি করেন, ভারত ভাগের পর প্রথম কয়েক দশক বিভিন্ন কারণে এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি থমকে গিয়েছিল, যা বর্তমানে সর্বোচ্চ আর নেই।
সোমবার রাজধানী নয়া দিল্লির কিরোরি মাল কলেজে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং জাপানের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের একীকরণের উপর একটি সেমিনারে যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের যে প্রাকৃতিক সংযোগ ছিল বা যে সংযোগ এই অঞ্চল উপভোগ করত ভারত বিভক্তির ফলে তা অনেক উপায়ে ভেঙে গেছে। এতে ভারত বিভাজন পর প্রথম কয়েক দশকে ভারতের অন্যান্য অংশে যে সমস্ত সুবিধা ছিল, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো সেসব সুবিধা ভোগ করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘আপনি যদি গত দশকের দিকে তাকান, উত্তর-পূর্ব ভারত আসলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই নাটকীয় উন্নতির একটি বড় সুবিধাভোগী হয়েছে, যখন আমরা ২০১৫ সালে স্থল সীমানা চুক্তি করেছিলাম। তখন ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির নতুন স্তরের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। আমরা দেখেছি, অন্যান্য অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ এবং অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর।’
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন যা দেখছি, সত্যি কথা বলতে, ইতিহাস যদি আমাদের প্রতি সদয় হতো তাহলে আরো আগেই এগুলো হওয়া উচিত ছিল। আমি সবসময় বলে থাকি, ভারতকে পূর্ব দিকে তাকানোর জন্য দিল্লিকে প্রথমে পূর্ব দিকে তাকানো উচিত এবং উত্তর-পূর্ব দিকে দেখা উচিত। তখনই কেবল উত্তর-পূর্বের সম্ভাবনার পূর্ণ ও যথাযথভাবে সমাদর করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম এবং মংলার মতো বাংলাদেশের বন্দরগুলিতে ভারতের ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া এই অঞ্চলে, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বে বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছে। ভৌগোলিকভাবে দেখলে মংলা বা চট্টগ্রামের মতো বন্দরগুলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রাকৃতিক বন্দর হতো। কিন্তু, রাজনৈতিক কারণে ওই বন্দরগুলোতে আমাদের প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। আজ, যখন আমরা উত্তর-পূর্বের সাথে উন্মোচিত সম্ভাবনার দিকে তাকাই, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিশাল উন্নতি আসলে সেখানে আরও অনেক সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে।
জয়শঙ্কর বলেন, পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার এবং তাইওয়ানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্কের উন্নতি গত এক দশকে নয়াদিল্লিকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করার কাজ দৃঢ় করেছে।
মিয়ানমারের বিষয়ে এস জয়শঙ্কর বলেন, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর গত কয়েক বছরে আরও গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা আমাদের নিজেদের সীমান্তে সেসব সমস্যার পরিণতি প্রশমিত করার কাজ করছি। মিয়ানমারের মাধ্যমে কানেক্টিভিটিতে আমাদের বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে।
সূত্র: এএনআই, এনডিটিভি
(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এমআর)