সাতক্ষীরা-২ আসনে ড. এরতেজার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:১২

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ড. কাজী এরতেজা হাসান। বৃহস্পতিবার তার পক্ষে সাতক্ষীরা সদর নির্বাচন কমিশন অফিসের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ফরম কিনেন ড. কাজী এরতেজা হাসানের বড় ভাই কাজী হেদায়েত হোসেন রাজ। এ সময় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ক্লিন ইমেজের তরুণ প্রার্থীই বাছাই করছে দলটি। আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড এমন ইঙ্গিতই দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাতক্ষীরা সদর আসনে সবার থেকে নৌকার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন এফবিসিসিআই পরিচালক ও দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প-বাণিজ্য ও ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ড. কাজী এরতেজা হাসান।

সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা সদর আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, আসনটি মূলত জামায়াত অধ্যুষিত। এখানে তাদের রিজার্ভ ভোট রয়েছে। কাজেই আওয়ামী লীগকে প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে অতি সতর্ক থাকতে হবে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এই আসন থেকে মীর মোস্তাক আহমেদ রবি একরকম বিনা বাধায় নির্বাচিত হলেও দলের সাংগঠনিক দিকটায় তিনি সফল হতে পারেননি বলেই এই আসন হতে জেলা পর্যায়ের প্রায় এক ডজন নেতা এখন দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।

উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা জেলায় দলের কোনো কার্যালয় পর্যন্ত নেই। এর জন্যও বর্তমান সংসদ সদস্যকে দায়ী করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন চাওয়া জেলার অপরাপর নেতারা দুর্নীতির অভিযোগও তুলছেন। অন্যদিকে দেশের অপর জনপ্রিয় দল বিএনপিও খুব বেশি সুবিধাজনক অবস্থায় এখানে নেই।

১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জয় লাভ করেন। ২০০৮ সালে এসে মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির অনুল্লেখযোগ্য পর্যায়ের নেতৃস্থানীয় চরিত্র আব্দুল জব্বার নির্বাচিত হলেও তিনি তার ইমেজ ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সাতক্ষীরা-২ আসন নিয়ে ড. কাজী এরতেজা হাসানকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্যের প্রতীক হিসাবে তাকেই তৃণমূল আওয়ামী লীগ পছন্দ করছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী হতে মাওলানা আব্দুল খালেকই নির্বাচন করবেন বলে জানা যায়। পুরো সাতক্ষীরা শহরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ড. এরতেজার ব্যতিক্রমী প্রচারণাও চলছে। শেখ হাসিনার উন্নত নেতৃত্বের গুণাবলী তুলে ধরে পোস্টার ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। সেদিক দিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক অনেকটাই পিছিয়ে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মীর মোস্তাক নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করলেও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেননি। শেখ হাসিনাকেও ঠকিয়েছেন। নেই তার কোনো উঠান বৈঠক কিংবা বড় ধরনের সভা-সমাবেশ। এমনকি নিজে মুক্তিযোদ্ধা হয়েও জামায়াত সখ্যতায় থেকে নানা সময়ে তাদের নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে ঘুরবার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন। যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনও বিব্রত। আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার উদ্যোগ না নিয়ে মীর মোস্তাক কার্যত আত্মকেন্দ্রিক আখের গোছানোর কাজে নিয়োজিত আছেন– এমন অভিযোগ প্রায় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। এই আসনে ধর্মীয় সংস্কৃতি স্পর্শকাতর পর্যায়ে থাকার দরুণ আওয়ামী লীগ বেশ সুবিধাজনক পর্যায়ে এই মুহূর্তে অবস্থান করছে। তারা একজন নতুন নেতা পেয়েছেন। সকল দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জামায়াতে ইসলামীকে টক্কর দিয়ে ড. এরতেজা হাসান এর মত জাতীয় পর্যায়ের তাবলিগ নেতাই কেবল জিততে পারেন এমন মতও রাখছে এলাকাবাসী। অন্যদিকে এরতেজা নিজে ব্যবসায়ী নেতা হিসাবেও আদৃত। তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে একটা ইপিজেড আমি করতে চাই। আমাদের মৎস্য সম্পদ, কৃষি সম্পদ হতে শুরু করে শিল্পের বিকাশে একটা কার্যকরী শহর হিসাবে সাতক্ষীরার উন্নয়নে কাজ করার অভিলাষে নিজেকে সঁপে দিতে চাই। তবে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলবো, আমরা গর্বিত জাতি। কারণ, প্রায় ৪৭ বছরের বাংলাদেশ দুইজন বিশ্বমানের নেতৃত্ব পেয়েছে। একজন বঙ্গবন্ধু আরেকজন জননেত্রী শেখ হাসিনা। মানুষকে মনে রাখতে হবে যে, শেখ হাসিনা দেশের জন্য যে সিদ্ধান্তই দেবেন তা নিয়ে অপচিন্তা না করে একবাক্যে বলতে হবে তিনি সঠিক রায় দিয়েছেন। তিনি বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেত্রী। আমরা কিছুই করতে পারবো না যদি তার আদর্শে চলতে না পারি। তিনি আমাদের মা। সন্তান হিসাবে তার হাতকে শক্তিশালী করা ছাড়া আর কোন রাস্তাও উন্মুক্ত নেই। রাজনীতি মানেই একজন শেখ হাসিনা। তার সমকক্ষ অন্য কেউ এই দেশে নেই।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শিক কর্মী হিসাবে ড. কাজী এরতেজা হাসান নিজ প্রতিষ্ঠান দৈনিক ভোরের পাতায় বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরি করেছেন। এমনটা বাংলাদেশের কোনো পত্রিকায় নেই। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছেন। এনিয়ে নানামুখী হুমকির সম্মুখীন হলেও তিনি দমে যাননি। আদর্শের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি এরতেজা হাসান।

(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :