সেই আবজালের দুর্নীতির অট্টালিকা জব্দ
দুর্নীতির মাধ্যমে গড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আবজালের ‘তামান্না ভিলা’ নামের উত্তরার বহুতল অট্টালিকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই বাড়ির পাঁচতলায় থাকতেন আবজাল। তবে অভিযানের সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।
সোমবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত এই কর্মচারীর উত্তরা মডেল টাউনে ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে আবজালের বাড়িটি জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু করে। আদালতের নির্দেশে দুদকের উপপরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ জনের দল অভিযান চালায়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন।
দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র মতো, অনুসন্ধান ও তদন্ত চলাকালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ‘অপরাধলব্ধ সন্দেহজনক অবৈধ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ’জব্দের এটাই প্রথম ঘটনা।
আবজালের উত্তরার বাড়ির কেয়ারটেকার মামুন হোসেন বলেন, আবজাল তার স্ত্রী ও পরিবারসহ থাকতেন। ২১ জানুয়ারিতে নোটিশ জারির পর তারা এখান থেকে চলে গেছেন।
গত ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক অর্থাৎ হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত।
আবজাল হোসেনের বাড়ি ফরিদপুরে। ১৯৯২ সালে তৃতীয় বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আর পড়াশোনা করা হয়নি তাঁর। ১৯৯৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে অফিস সহকারী পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন তিনি। ২০০০ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হলে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ক্যাশিয়ার পদে বদলি হন। এই ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমান পদে যোগ দেন।
আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানম একই প্রকল্পে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত স্বামী-স্ত্রী মিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য তারা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
অফিস সহকারী বা কেরানি হিসেবে চাকরি নিলেও আবজাল হোসেন অল্প সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন।
ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/বিইউ/ডিএম