সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও করণীয় নির্ধারণে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কমিটি
সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকায় বনের আগুনের ঘটনায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে ১০ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী তিনদিন টহল দল বনে মনিটরিং করবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো-কে সভাপতি এবং খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পালকে সদস্যসচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যগণ হলেন পরিবেশ অধিদপ্তর এর প্রতিনিধি; সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ ও বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. এস.এম ফিরোজ; আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ম্যানগ্রোভ ইকোলজিস্ট এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের প্রফেসর ড. স্বপন কুমার সরকার এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি এর প্রতিনিধি।
এই কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বনজসম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়ন পূর্বক বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ডের সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন।
এ দিকে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখন ড্রোনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। ড্রোন মনিটরিং-এর মাধ্যমে আজ (সোমবার) তিনবার আগুনের ধোঁয়া শনাক্ত করে, তা দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। এই কার্যক্রম আরও তিনদিন চলমান থাকবে।’
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, বাগেরহাট-এর আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের অন্তর্গত আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির নিয়ন্ত্রণাধীন বনাঞ্চলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর যে সব স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছোট পরিসরে আগুন ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল, গতকাল সারা রাত বন কর্মীগণ দলভিত্তিক নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্টের মাধ্যমে সব স্থানের আগুনই নিভিয়ে ফেলেছেন।
‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে বর্গকিলোমিটার এলাকার অগ্নিকাণ্ডের কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ব্যপ্তি ছিলো ৭.৯ একর যার মধ্যে ৫ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’ বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের।
মন্ত্রণালয় বলছে, বনের আগুনের ক্ষেত্রে মাটির গভীরে গাছের শিকড়ের মধ্যেও আগুন থেকে যায়, যা পরবর্তীতে কয়েক ঘণ্টা পরে পুনরায় আগুনের বা ধোঁয়ার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। সেজন্য যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আজ (সোমবার) থেকে আগামী তিনদিন পর্যন্ত ঘটনাস্থলে বন বিভাগের টহল দল আগুন মনিটরিং এবং কোনো স্থানে নতুন করে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে তা নিভিয়ে ফেলার জন্য দায়িত্বরত থাকবেন।
বর্তমানে ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ দায়িত্বরত আছেন। ফায়ার সার্ভিসের টিম আগামীকালও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকবেন। আগুন নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাওয়ায় কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/০৬মে/এসআইএস)