নাগাসাকি সফর: পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বার্তা পোপের

পারমাণবিক বোমায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল জাপানের নাগাসাকি শহর। সেই স্মৃতি স্মরণ করে নাগাসাকির মাটিতে দাঁড়িয়ে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বার্তা দিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন আদতে সুরক্ষার ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া কিছুই নয়। দেশ ও দশের কথা ভেবে তাই অযথা আস্ফালন নয়, প্রয়োজন পরমাণু অস্ত্রমুক্ত এক বিশ্ব।
এদিন প্রদর্শণীতে থাকা মার্কিন মেরিন জো ও'ডোনেলের তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, নাগাসাকির বিধ্বস্ত প্রান্তরে দাঁড়িয়ে এক কিশোর। পিঠে বাঁধা ছোট ভাইয়ের মাথা একদিকে কাত হয়ে পড়েছে। পরমাণু বোমা কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট ভাইটাকে। কিশোরের অসহায় চোখে জল নেই, আছে অদ্ভুত শূন্যতা। এটি স্পষ্টভাবে ১৯৪৫ সালের স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়।
১৯৪৫ সালে নাগাসাকি ও হিরোশিমার বুকে আছড়ে পড়েছিল পরমাণু বোমা। প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই লক্ষাধিক মানুষ।সেই মানুষের কষ্ট ভাগ করে নিতেই জাপান সফরের দ্বিতীয় দিনে নাগাসাকি ও হিরোশিমায় গিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।
১৯৮১ সালে দ্বিতীয় জন পলের পর এই প্রথম কোনো পোপ জাপানের এই দুই শহরে পা রাখলেন। নাগাসাকির স্মৃতিসৌধে ফুল রাখার পর বেশ কিছুক্ষণের নিঃস্তব্ধতা। তারপর পোপ বলেন, ‘এই জায়গাটাই আমাদের বুঝিয়ে দেয়, আমরা একে অপরের উপর কতটা যন্ত্রণা চাপিয়ে দিই। যে বিশ্বে হাজার হাজার শিশু ও পরিবার অমানবিক পরিস্থিতিতে বাস করছে, সেখানে বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে! মানবিকতা ও পরিবেশরক্ষার খাতিরে অন্তত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে রাশ টানার সময় এসেছে। পরমাণু শক্তি যে ভয়, অবিশ্বাসের আবহ তৈরি করেছে, তা মুছে ফেলা খুব প্রয়োজন।’
স্বকীয়তায় বরাবরই নজির সৃষ্টি করেছেন ৮২ বছরের পোপ ফ্রান্সিস। তার জাপান সফর নিয়ে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। সফরের সময়ে নাগাসাকি এবং হিরোশিমার যে পরিবারগুলি এখনও পরমাণু হামলার ক্ষত বইছেন, সেই হিবাকুশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পোপ।
ঢাকা টাইমস/২৫নভেম্বর/একে

মন্তব্য করুন