কুকুরগুলোর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন তারা

জহুরুল ইসলাম জহির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
| আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৫১ | প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল ২০২০, ১৮:০৮

করোনাভাইরাসের কারণে সব মানুষই এখন ঘরবন্দি। সেই সঙ্গে শহরের প্রতিটি হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ। সাধারণ মানুষের চলাচলও নিষিদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলো পড়েছে মারাত্মক খাদ্য সঙ্কটে। তাদের পেটে খাবার নেই। কারো কাছে চেয়ে কিছু নেয়ারও ক্ষমতা নেই তাদের। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খাবারের অভাবে ভুগছে কুকুরগুলো।

ঠিক এ সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানের এসব প্রাণির মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন রাতের আঁধারে অনেকেই। মানুষ যেখানে খাদ্য সংকটে, সেখানে এসব প্রাণিকে কে আর খাবার দেবে। মানুষের পাশে তো অনেককেই দেখা যায় খাদ্যসামগ্রী দিতে। কিন্তু এদের তো কেউ দেয় না। না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। তাদের কথা বিবেচনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু প্রাণিপ্রেমিক অভুক্ত এ কুকুরগুলোকে খাদ্য সরবরাহ করছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদি, সাংগঠনিক সম্পাদক লাকি, রবি সিবলি মিলে নিজেদের উদ্যোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বাতেন খাঁর মোড়, সেবা ক্লিনিক, বিশ্বরোড মোড়, হাসপাতাল এলাকাসহ বেশ কয়েক জায়গার কুকুরগুলোকে খাবার দিচ্ছেন। আর এর কাজ করতে পেরে নিজেদের কিছুটা হলেও ভাল লাগছে বললেন তারা। বলেন, মানুষ যে কোনভাবে খাবার খেতে পাচ্ছে, কিন্তু এধরনের বোবা প্রাণিগুলো খাবারের কারণে অনেকেই দুর্বল হয়ে মারা যাচ্ছে। সেকথা বিবেচনা করেই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করি।

এদিকে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের, হঠাৎপাড়া এলাকায় এমন বেওয়ারিশ বেশকিছু কুকুরের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা বেগম। তিনি জানান, রাতে রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখতে পাই- অনেকগুলো কুকুর আমাকে দেখে খাবারের জন্য ঘুরে ফেরে। তাদের দেখে হতভাগ হয়েছে তাদের সেসময় কিছু পাউরুটি দিয়ে আসি। আর সেখান থেকে এসে নিজেকে প্রশ্ন করলাম যে আমরা খেতে পাচ্ছি, কিন্তু তাদের খাবার কে দেবে। সেকথা বিবেচনা করেই প্রতিদিন ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে ১ কেজি চাল ও ডাল দিয়ে তৈরি খিঁচুড়ি বানিয়ে তাদের খাওয়ানো হবে। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করবে তার ছেলে।

অপরদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুল বাবি, আমলগীর হোসেনসহ এলাকার বেশকিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবক নিজ নিজ এলাকায় অভুক্ত বোবা এসব প্রাণির খাবার খাওয়াছেন। তাদের ফেসবুক ওয়াল থেকে জানা গেছে।

আরেক গণমাধ্যম কর্মী কপোত নবী জানান, আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ১৫নং ওয়ার্ডের ভেলুর মোড়ের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই কুকুর আমি ভালবাসি। বর্তমানে আমার এলাকাতে ৪/৫টি কুকুরকে প্রতিদিন বাড়ি থেকে ১২ মাসি খাবার খাওয়াই। ওরা আমার বন্ধুর মত।

তিনি আরো জানান, আমি অনুরোধ করব- আপনার এলাকার বা আপনাদের বাসার সামনে থাকা কুকুরটির মুখে বাসার পরিত্যক্ত খাবারগুলো তুলে দিন। কারণ বিভিন্ন ধরনের প্রাণির কারণে আমাদের সমাজে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়। তাই তাদের প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।

(ঢাকাটাইমস/১১এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :