জ্ঞানের আলো ছড়াতে তরুণদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

জাহাঙ্গীর আলম ভূইঁয়া, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:১৯

বর্তমান স্মার্টফোনের যুগে বই পড়ার অভ্যাস এখন আর মানুষের মাঝে দেখায়ই যায় না। তবে ব্যতিক্রম উদ্যোগে মানুষের মাঝে এ অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন হাওরপাড়ের একদল তরুণ। গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দিয়ে আসছেন তারা। এছাড়া গ্রামের মানুষের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন একটি গণগ্রন্থাগারও।

‘ঘাঘটিয়া গণগ্রন্থাগার’টি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন ঘাগটিয়া (চক বাজার) এলাকায় অবস্থিত।যা এলাকার পরিশ্রমী ও উদ্যমী ২৫ জন তরুণের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠেছে।তবে আলোর মুখ দেখালেও অর্থের কারণে গ্রন্থাগারটির জন্য বই কেনা যাচ্ছে না বলে জানান এর উদ্যোক্তারা।

জানা গেছে, তরুণদের আগ্রহ ও তাদের কাজ দেখে গ্রামের বাসিন্দা ডাঃ তোয়াজ আলী ঘাঘটিয়া চক বাজারে তার একশতক জায়গা গ্রন্থাগারের জন্য দান করেন। সেখানেই গণগ্রন্থাগারটি স্থাপন করে গত মাসে গ্রামের সর্বস্থরের জনসাধারণের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে বাড়ি বাড়ি বই দিয়ে আসছেন এসব তরুণ। তারা শুরুতেই ৮০টি শিক্ষা‚ লক, দার্শনিক, গল্প, প্রবন্ধ, ঐতিহাসিক বইসহ বিভিন্ন রকমের বই সংগ্রহ করে রাখেন। আর প্রতিদিন কম হলেও ৬০-৭০ জন স্থানীয় তরুণ, যুবক, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বইপ্রেমী ও এলাকাবাসী পড়তে আসছেন গন্থাগারটিতে। অনেকেই আবার এখান থেকে বই নিয়ে গিয়ে পড়ছেন। অল্প দিনেই সবার মাঝে সারা ফেলেছে তরুণদের উদ্যোগে তৈরি এ গ্রন্ত্রাগার ও তাদের র্কাযক্রম।

গ্রন্থাগারে পড়তে আসা বাদাঘাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে কোনো লাইব্রেরি নেই। এর আগে আগে একটি লাইব্রেরি স্থাপিত হলেও তা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এখানে লাইব্রেরি তৈরি হওয়ার পর থেকে যে সময়টা আমি অন্য কাজে ব্যয় করতাম সে সময়টা এসে অনেক বই পড়ছি। আগে অনেক বইয়ের নাম শুনতাম কিন্তু পড়তে পারতাম না। এখন সেই বইগুলো পড়ে সময়টা ভালো কাটে।

গ্রামের বাসিন্দা শফিক মিয়া জানান, ‘এখন যে জামানা আইছে সব পোলাপান খালি মোবাইল নিয়ে ব্যস্থ থাকে। গ্রামের কিছু তরুণ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বই দিয়ে পড়ার জন্য বলছেন। আমাকেও একটি বই দিয়েছে পড়ার জন্য। এই কাজটি খুবই ভাল। তাদের পাশে যদি স্থানীয় বৃত্তশালী ও সরকার এগিয়ে এলে তারা আরও ভাল কিছু করতে পারবে। যা উপজেলার সুনাম বয়ে আনবে।’

স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক শামিম আহমেদ বলেন, ‘গ্রামের তরুণদের এই কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে ও সমাজের সবার মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।

এ বিষয়ে ঘাগটিয়া গণগ্রন্ত্রাগারের আহ্বায়ক অমিয় হাসান বলেন, ‘আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, এলাকায় জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া। আমাদের সদস্য ২৫ জন। গত ৩ আগস্টে ৮০টি বই দিয়ে শুরু করি। এখন সবার সহযোগিতায় বইয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক। পাঠক সংখ্যা ৭ শতাধিক। কিন্তু প্রয়োজনী চাহিদা অনুযায়ী পাঠকদের বই দিতে পারছিন না। এছাড়াও জায়গার সংকট রয়েছে। লাইব্রেরি বিকাল ৩-৮ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেও প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে পাঠকদের চাহিদার জন্য।’

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :