কুড়িগ্রামে গো-খাদ্য সংকটে বিপাকে বন্যাদুর্গতরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর ২০২০, ২২:৩৬
অ- অ+

দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় কুড়িগ্রামে দেখা দিয়েছে তীব্র গো-খাদ্য সংকট। যেটুকু মিলছে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে গৃহস্থদের। জেলার বাইরে থেকে খড় নিয়ে আসায় পরিবহন খরচসহ দাম বেশি থাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহযোগিতা দেবার আশ্বাস দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

কুড়িগ্রামে ভারী বর্ষণ আর মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় দফায় বন্যায় পানির কারণে জেলার কৃষি জমি এবং নিম্নাঞ্চল চারণ ভূমি ডুবে আছে। এতে করে গো-চারণ ভূমি পানির নিচে ডুবে থাকায় ঘাস-খড় নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে পানি স্থায়ী হওয়ায় জেলা জুড়ে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।

পানি কমতে শুরু করলেও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে চরাঞ্চলের মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষজন নিজেদের খাবারের পাশাপাশি তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন প্রধান সম্পদ গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ভারী বৃষ্টিপাত আর বন্যার পানি স্থিতি থাকায় চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের চারণ ভূমি এবং বাড়িতে সঞ্চিত গবাদি পশুর খাবার সম্পুর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পরবর্তী এ সময়টাতে চরাঞ্চলের কর্মহীন মানুষজন নিজেদের খাবার সংগ্রহ দুষ্কর সেখানে গো-খাদ্যের সংকটে দিশেহারা দিন কাটছে।

বন্যার আগে জেলায় একশ খড়ের আটির দাম ছিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। আর বর্তমানে সেখানে প্রায় ৮/৯ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খড়। অনেকেই সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় ধারদেনা কিংবা গবাদি পশু বিক্রি করে খাদ্য কিনছে। খড়ের দাম বেশি হওয়ায় স্বামর্থ্য না থাকায় কেউ বাধ্য হয়েই গরু-মহিষের খাবার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বাঁশ-গাছের পাতাসহ কচুরিপানা। এতে করে গবাদি পশু মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ফলে গাভির দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

এবারের বন্যায় জেলার নয়টি উপজেলায় ৫৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার পাঁচ শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের চার লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সরকারি হিসাবে জেলায় গরু আট লাখ ৪৭ হাজার ১৪৬টি, মহিষ তিন হাজার ৪৯৫টি, ছাগল চার লাখ ১২ হাজার ৪৮৫টি, ভেড়া এক লাখ ছয় হাজার ২৩৩টি এবং ঘোড়া দুই হাজার ৪৯৯টি রয়েছে। এর মধ্যে বন্যা কবলিত হয়েছে গরু ৬০ হাজার ১৬টি, মহিষ ৭৩২টি, ছাগল ৩৮ হাজার ৮১৪টি, ভেড়া ছয় হাজার ১০৭টি, মুরগি এক লাখ ৬০ হাজার ৩৭টি এবং হাঁস ৪৮ হাজার ৭৭৩টি গবাদি পশু। আর চারণ ভূমি এক হাজার ১১৬ একর এবং ১৯৩ টন খড়, কাঁচা ঘাস ৪৯৫ টন নষ্ট হয়েছে।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হাই সরকার গো-খাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যে বন্যা চলাকালে জেলায় ১২ লাখ টাকার পশু খাদ্য এবং জাতিসংঘের এফএও-র পক্ষ থেকে সদরে ৯৩১টি এবং চিলমারী উপজেলায় দুই হাজার ৯১৯টি পরিবারকে ৭৫ কেজি করে পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রাণী সম্পদ বিভাগ ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান।

(ঢাকাটাইমস/৬অক্টোবর/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টঙ্গীতে মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক মাহফুজকে হত্যা
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে Industry Academia Collaboration Summit-2025 শুরু
নির্বাচনি প্রতীক: নৌকা বাদ ও শাপলা তালিকাভুক্ত করার দাবি এনসিপি’র
কুষ্টিয়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ফটকে ময়লা ফেলে কর্মবিরতি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা