ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের উলপুর জমিদার বাড়ি

শেখ মোস্তফা জামান, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:২৮
অ- অ+

বাংলার ঐতিহ্য আর পূরাকীর্তির নিদর্শনে ভরা একটি জনপদ গোপালগঞ্জ। শত শত বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে বুকে নিয়ে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে গোপালগঞ্জ। পূরাকীর্তির নিদর্শনে ভরা একটি প্রাচীন জনপদ। পুরানো সেসব অনেক নিদর্শনই এখন আর নেই, অযত্ন আর অবহেলায় জীর্ণ-শীর্ণ জঙলাবৃত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব ভবন দেখতে ভিড় করছে দর্শনার্থীরা। জমিদার বাড়ির বেশিরভাগ জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে উলপুর জমিদার বাড়ি।

গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে উলপুর গ্রামে প্রাচীন বাংলার শৌর্যবীর্য এবং আভিজাত্যের সাক্ষী উলপুর জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এই জমিদার বাড়িটি এই অঞ্চলের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, উলপুরের জমিদারেরা একশ ঘর শরিক ছিলেন। ১৯০০ শতকে জমিদার প্রীতীশচন্দ্র রায় চৌধুরী প্রায় ২০০ একর জায়গাজুড়ে উলপুর জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। কালের আবর্তে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলেও তৎকালীন জমিদার কর্তৃক নির্মিত ভবনগুলো ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে স্বগর্বে টিকে আছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরে জমিদার প্রিতিশ রায় কলকাতা চলে যায়। সরকার বাড়িটি খাস খতিয়ানে নেয়।

এই বাড়ির ভবনগুলোর কারুকাজ অত্যন্ত সুন্দর। এই জমিদার বাড়িতে বেশ কয়েকটি বড় দিঘী রয়েছে। এক সময় এই গ্রামে জমিদারদের ৩৬৫টি ভবন ছিল। তা নদীগর্ভে ও অযত্নে ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন উলপুর গ্রামে জমিদারীর কাজে ব্যবহৃত আটটি দোতলা দালানসহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ভবন রয়েছে। এসব ভবন বর্তমানে উলপুর তহশীল অফিস, সাব পোস্ট অফিস, পুরোনো ইউনিয়ন বোর্ড অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। উলপুর জমিদার বাড়ির বেশিরভাগ স্থাপনা আজ ধ্বংসের পথে।

কথিত আছে এক সময় এই জমিদারদের বাড়ির সামনে দিয়ে জুতা সেন্ডেল খুলে ও ছাতি বন্ধ করে চলাফেরা করতে হতো সাধারণ মানুষদের। এই জমিদার বাড়িতে বিচার ও শাসন ব্যবস্থাসহ জেলখানা ছিল। এখন কিছু ভবন প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। আর ভবন অযত্নে আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এই বাড়িতে বেশ কয়েকটি ভবন ও বড় দিঘী রয়েছে। ভবনগুলোর স্থাপত্যশৈলী ও কারুকাজ অত্যন্ত নয়নাভিরাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মধুমতিন নদীর বিলরুট ক্যানেল। দর্শনার্থীরা এখানে এসেই এর মনোরম কারুকাজ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান খান জানান, পর্যটন ও দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটানোর জন্য ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এসব পূরাকীর্তি তথ্যসমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরতে সংরক্ষণ করা হবে। ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণ বিভাগের কাছে নেয়ার জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/কেএম

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অনিয়মের প্রমাণ পেল দুদক
কোতয়ালী এলাকায় বিশেষ অভিযান, মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ১৫
ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
মুরাদনগরে মিথ্যা মামলা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা