এক মধ্যরাতে জেগে ওঠা আগুন!

সাদিয়া নাসরীন
 | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৫৫

যেখানে এই দেশের প্রতিষ্ঠিত নারীরাও পুরুষের প্রশ্নে ‘চরিত্র’ হারানোর বেদনায় পুরুষতন্ত্রের কাছেই বিচার চাইতে হাত ধরে দাঁড়ান, এমনকি পদস্থ সাংবাদিক-নারীবাদীরাও যৌনতার প্রচলিত স্টেরিওটাইপকেই মেনে নিয়ে ‘একজন চরিত্রবান নারীকে কেন চরিত্রহীন বলা হলো’ বলে ভিক্টিমহুড এপ্লাই করে ‘নারী সাংবাদিককে চরিত্রহীন বলায় প্রতিবাদ’ কর্মসূচি ডাকেন। সেখানে অতি সাধারণ, নাম না জানা একটি মেয়ে, কোনো ‘নারীবাদ’ না পড়ে, নারীবাদ না পুছে মাঝরাতে পুলিশের পোশাক পরা তিনজন দানবের তাণ্ডবে এতটুকুও কাঁচুমাচু না হয়ে, পুরুষতান্ত্রিক ঘিনঘিনে আক্রমণে এতটুকুও বিভ্রান্ত না হয়ে, বরং ঋজু হয়ে, গলা উঁচিয়ে, আঙুল তুলে, চোখে চোখ রেখে অনবরত প্রশ্ন করে গেছে, ‘আমি অভদ্র, কোনো সমস্যা?’ ‘আমি খারাপ মেয়ে, কোনো সমস্যা?’ ‘আমি হোটেল থেকে নামছি, কোনো সমস্যা?’ ‘আমি বেয়াদব, কোনো সমস্যা?’ ‘আমি সারারাত বাইরে থাকলে আপনার সমস্যা কি ?’

না, শুধু প্রশ্ন নয় এগুলো। কেবল উচ্চারণের শব্দ তো নয়! বরং নিপীড়ন, নিয়ন্ত্রণ, অপমান আর আপসের মোহঘুম ভেঙে জেগে ওঠা সকালের আগমনি সংগীত গেয়েছে মেয়েটি বজ্র সুরে।

মাঝরাতে রাজপথে একটা মেয়ের পথ আটকে পা ফাঁক করে দাঁড়ানো তিনটা পুরুষের হ্যাড়ম আর পুরুষতন্ত্রের আস্ফালনকে পা সিধা করে লাত্থি মেরে চুপসে দিয়ে নাক উঁচু করে ঘরে ফিরে গেছে আগুনের মেয়েটি।

জানিয়ে গেছে এই যাওয়া শেষ যাওয়া নয় তার। সে বারবার ফিরে আসবে। এক থেকে একশ হবে, হাজার থেকে লক্ষ হবে। ভিনাসের মতো লক্ষ লক্ষ ডুবে যাওয়া মেয়ের সম্মিলিত শক্তির পুঁজি নিয়ে উঠে আসবে। আবাবিল পাখির ঝাঁক হয়ে ধ্বংসের বার্তা নিয়ে নেমে আসবে প্রতিবাদের, প্রতিরোধের মাঠে।

সেই মেয়েরা অপ্রতিরোধ্য আঙুলের শক্তিতে ও সাহসে প্রবল তাচ্ছিল্যে, অবজ্ঞায়, উন্নাসিকতায় লণ্ডভণ্ড করে দেবে অহঙ্কারী পুরুষতন্ত্রের ওই ফাঁপা সাম্রাজ্যবাদ। সেই ঘণ্টা বেজে গেছে। কি মধুর সেই শব্দ! আহা!

লেখক: কলামিস্ট

ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :