এশিয়ার শ্রেষ্ঠ শিকারির বন্দুক দেখতে এসেছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ মার্চ ২০২১, ১৮:৩৪
অ- অ+

মানুষ খেকো ৩৩টি বাঘ শিকার করে বিশ্বসেরা শিকারীর স্থান দখল করেছেন ইংরেজ শিকারি জিম করবেট। অথচ সাতক্ষীরার গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের পচাব্দী গাজী ৫৭টি মানুষ খেকো বাঘ শিকার করেও আঞ্চলিকতার কারণে সেই স্থান দখল করতে পারেননি। তবে এশিয়ার বিখ্যাত বাঘ শিকারি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।

পচাব্দী গাজী যে বন্দুক দিয়ে শিকার করতেন, সেটি স্বচক্ষে দেখতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ঘুরে গেলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। গত ৩ মার্চ তিনি হেলিকপ্টার থেকে নেমে সরাসরি শ্যামনগর আসেন।

এসময় তাকে অভিনন্দন জানান সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম ও নীলডুমুর ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইয়াসিন চৌধুরী। পরে তিনি শ্যামনগর থানায় রক্ষিত ঐতিহাসিক সেই বন্দুকটি দেখেন।

মানুষখেকো বাঘ শিকারের জন্য পচাব্দী গাজী বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার পচাব্দী গাজীকে বেঙ্গল টাইগার নামে অভিহিত করেছিলেন। পচাব্দী গাজীর মৃত্যুর পর তার ব্যবহৃত বন্দুকটি উত্তরাধিকারসূত্রে তার পুত্র আবুল হোসেন পাওয়ার পরে বন্দুকটি রিনিউ না করার কারণে শ্যামনগর থানার অস্ত্রাগারে দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে পড়ে আছে। ঐতিহাসিক এই বন্দুকটি একনজর চোখে দেখার জন্য বিজিবি মহাপরিচালকের এই সফর।

এসময় তিনি বিজিবির অফিসার ও সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সীমান্ত রক্ষায় তাদের আরো তৎপর হতে হবে। মাদক, নারী পাচার ও চোরাচালানের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’

প্রসঙ্গত, পচাব্দী গাজী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী শিকারি পরিবারে ১৯২৪ সালে জন্ম। তার প্রকৃত নাম আব্দুল হামিদ গাজী। ১৯৪১ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার ‘গোলখালির সন্ত্রাস’ নামে পরিচিত একটি নরখাদক বাঘ হত্যার মাধ্যমে পচাব্দী গাজীর শিকার করা শুরু হয়। শিকারের জন্য উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি লাভ করেন পিতার ডাবল বেরেল মাজল-লোডিং বন্দুকটি। ১৯৫৫ সালে তিনি বনবিভাগের অধীনে বনপ্রহরীর কাজে যোগদান করেন। এ কাজে যোগদানের পরপরই শুরু হয় দুর্র্ধষ বাঘের সঙ্গে তার বিচিত্র লড়াইয়ের লোমহর্ষক জীবনের এক নতুন অধ্যায়। তার শিকারের কৌশল ছিল অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র। বাঘকে বশীভূত করার উদ্দেশ্যে তিনি অলৌকিক পদ্ধতির পরিবর্তে আত্মোদ্ভাবিত বিভিন্ন কৌশল, গভীর ধীশক্তি ও প্রযুক্তির আশয় নিতেন। সাতক্ষীরার বুড়ি গোয়ালিনী ফরেস্ট রেঞ্জে ‘আঠারোবেকি’ এলাকায় ‘টোপ’ পদ্ধতিতে তিনি যে বাঘটি হত্যা করেন সেটি ছিল সুন্দরবনের শিকারের ইতিহাসে দীর্ঘতম বাঘ, প্রায় ১২ ফুট দীর্ঘ। শ্রেষ্ঠ এ শিকারি ১৯৯৭ সালে মারা যান।

(ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/পিএল)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বনানীতে পথশিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা