নিয়তির রসাতল
তোমার লীলা রহস্য যতই দেখাও
আমি কিন্তু আর কিচ্ছু চাইব না,
এই তোমাকে সাফ সাফ বলে দিলুম বনমালী!
নিজের কব্জির জোরেই নিজে চালাব
কায়কারবার কিংবা গৃহস্থালি।
চেয়ে যদি না পাই;
তখন বলো, ‘নিজেকে পাবার যোগ্য করে তোল,
আত্মার গুপ্তধনের ভাণ্ডার
বিশ্বাসের চাবি দিয়ে খোল’।
যোগ্যতর হয়েও যখন সিকে ছিঁড়তে দেখি না,
তখন বলো, ‘চাওয়ায় ভুল ছিল,
তরিকায় গলদ ছিল, পন্থায় বিচ্যুতি ছিল,
মন্ত্র উচ্চারণে সূক্ষ্ম ত্রুটি ছিল, বিশ্বাসে ফাটল ছিল,
আচার পালনে দোষের আকর ছিল’।
এখন আমার কাছে টিপকলের পানির মত সব ফকফকা;
তোমাদের ওসব ওজর অজুহাত ঠুনকো বাহানা,
ধাক্কা খেয়ে খেয়ে ফেরেবির সব ফ্যারকা
আমার ঠিকঠাক হয়ে গ্যাছে জানা।
কায়দা করে ফায়দা লোটার মতলবে যমের অরুচি,
মন্ত্রে মন্ত্রে ষড়যন্ত্রের বীজ-বোনা কূটের নিকুচি।
চেয়ে কোনো লাভ নেই, হাত গলে কোনদিন পড়তে দেখি না
ফুটো কানাকড়ি,
কেবল চাওয়ার চোয়াল ভাঙ্গে চাতুরির তাগড়াই হাতুড়ি।
চাওয়ার সঙ্গে পাওয়ার কুস্তি লড়ে
আমি আর বুদ্ধুর মতো ঘাম ঝরাবো না;
আষাঢ়ের পানির সোঁতে খোঁট থেকে
ফসকে পড়ে যাওয়া বিড়ি
আবার তুলে এনে ওতে আর আগুন ধরাবো না।
পাকা মাল্লা মাঝির মাথায় বাজ পড়ুক;
আমি চাইনা,ওরা আমার ভাঙ্গা নায়ের হাল ধরুক।
আমি তাদের কাছে পাতবো না হাত;
আমি দেখব কোথায় সাগরের ঢেউয়ের কুন্ডুলির খাত।
আমার দু’ বাহুই হবে আমার নায়ের হাল-বৈঠা,
আমার নাও ডোবাবে, কার আছে এমন বুকের পাটা?
জেনে রাখো, নাও ডোবালেও আমি ক্ষান্ত হবো না;
ঢোক ঢোক জল গিলে তোমার লীলার আশায়
মাথায় হাত দিয়ে নির্বোধের মতো বসে থাকবো না।
বুকের ছাতি উঁচিয়ে আমি সাঁতরে পাড়ি দেব
অথৈ সায়রের ফণাতোলা উত্তাল জল,
আমি দেখে আসতে চাই-
কোন অচিন মুলুকে আছে আমার নিয়তির
অন্তিম রসাতল।