রোহিঙ্গাদের ফেরাতে দায়িত্ব নিন, জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক যেন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত একটি উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে দেয়া বক্তব্যে এই আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বরাবরই রোহিঙ্গা সংকটের প্রধান কারণ সমাধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে নিজ দেশে স্থায়ীভাবে প্রত্যাবর্তনের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছি।’
ভার্চুয়াল সভায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষায় সাধারণ পরিষদ ও মানবাধিকার পরিষদসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
সভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা স্বাগত বক্তব্য দেন।
ভার্চুয়াল সভায় প্যানালিস্টদের মধ্যে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিশেষ পর্যবেক্ষক টন অ্যান্ড্রুস, গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক মহাসচিবের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যালিস ডব্লিউ দেরিতু, কানাডা ও তুরস্কের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াই ওয়াই নু অংশগ্রহণ করেন।
জিসিআর-২পি ড. সিমন অ্যাডামস এই প্যানাল আলোচনা সঞ্চালনা করেন।
মূল-প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও মানবিক সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে নিরাপত্তা পরিষদের আন্তরিকতার ঘাটতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।
নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী তাদের দায়বদ্ধতা প্রতিপালন করবে এবং মিয়ানমার সমস্যার সমাধানে অনতিবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে মোমেন আশা প্রকাশ করেন।
তিনি সীমিত সম্পদ ও স্থানের অপ্রতুলতা সত্ত্বেও মিয়ানমার থেকে প্রাণ ভয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদান নিশ্চিতে সরকারের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে আবাসনের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, সরেজমিন পর্যাবেক্ষণের পর জাতিসংঘ ও আমাদের অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা ভাসানচরের ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। আর এজন্যই এখন তারা সেখানে তাদের কার্যক্রম শুরু করার কথা বিবেচনা করছে।
আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঞ্চলিক সংস্থা ও দেশ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিজ নিজ অবস্থান থেকেই দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানান।
প্যানালিস্টরা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা এই সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে তার একটি স্থায়ী সমাধানের ওপর জোর দেন-যা মিয়ানমারেই দায়িত্ব। তারা মিয়ানমারে নির্মম সহিংসতা ও মানবাধিকার লংঘনের শিকার মানুষের ন্যায়-বিচার নিশ্চিতে দায়বদ্ধতা নিরূপণে চলমান জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানান।
ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে সদস্য রাষ্ট্র, সুশীল সমাজ, শিক্ষক ও অন্যান্য অংশীজনরা অংশ গ্রহণ করেন।(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/জেবি)
সংবাদটি শেয়ার করুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
জাতীয় এর সর্বশেষ

দেশের জনসংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানিতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

পরবর্তী রাষ্ট্রপতি রাজনীতিবিদ নাকি আমলা, চূড়ান্ত হবে মঙ্গলবার

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নিরাপদ খাবার নিশ্চিতের বিকল্প নেই: খাদ্যমন্ত্রী

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতির শোক

তিন ফসলি জমিতে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ওষুধে ভেজাল করলে যাবজ্জীবন, মন্ত্রিসভায় আইন অনুমোদন

ঢাকা আজও দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম

তিন দিনের সফরে ঢাকায় বেলজিয়ামের রানি
