বালিশ ছাড়া ঘুমানোর যত উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১০:১৯| আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১১:৪৫
অ- অ+

রাতে ঘুমানোর সময় সবাই বালিশ ব্যবহার করেন। মাথার নিচে বালিশ না দিলে যেন ঘুমই হয় না। এই অভ্যাসটি সবারই। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য মাথার নিচে বালিশ গুঁজে শোয়ার অভ্যাস এখনই বদলে ফেলুন। না হলে কিন্তু পস্তাতে হতে পারে।

ঘুমানোর সময় মাথা এবং শিরদাঁড়াকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্যই মূলত বালিশের ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বালিশ যতটা না উপকারে লাগে, তার থেকে অনেক বেশি অপকার হয়। অনেকেই বলেন, মাথার নিচে ওই এক পোটলা তুলা না থাকলে যে ঘুমই আসতে চায় না। কেমন একটা অস্বস্তি টেনে হিঁচড়ে ঢুকতে দেয় না ঘুমের রাজ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কয়েকটা দিন একটু কষ্ট স্বীকার করুন, দেখবেন আপনা আপনি অভ্যাস বদলে যাবে। জেনে নিন বালিশ ছাড়া ঘুমানোর উপকারিতা।

শিরদাঁড়া চাঙ্গা থাকে

আপনার কি মাঝে মধ্যেই পিঠে ব্যথা হয়? তাহলে যত শিগগিরই সম্ভব বালিশ ছাড়া শোয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। মাথার সঙ্গে বাকি শরীরের তল বদলে দেয় বালিশ। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে শিরদাঁড়ায়। যারা শিরদাঁড়ার ব্যথায় কাবু তারা বালিশ ছেড়ে দিলেই এর সুফল অনুভব করতে পারবেন। বালিশ ছাড়া শুলে শিরদাঁড়া স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে, ফলে চোট-আঘাত বা অন্য কোনও সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে। প্রসঙ্গত, খেয়াল করে দেখবেন বালিশে মাথা দিয়ে শুলে শিরদাঁড়ার একটা অংশ একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘাড়ে বা পিঠে যন্ত্রণা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

ঘাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে

পরিসংখ্যান বলছে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই কাঁধ, ঘাড় অথবা পিঠের কোনও রোগে ভুগছেন এবং রোগীদের বেশিরভাগেরই বয়স ২৫-৪০ এর মধ্যে। কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জানেন? এক্ষেত্রে দায়ী হল বালিশ। তাই তো চিকিত্‍সকেরা কম বয়স থাকতেই বালিশ ছাড়া ঘুমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এমনটা করলে শোয়ার সময় ঘাড় এবং তত্‍সংলগ্ন অঞ্চলে রক্ত সরবরাহ ঠিক মতো হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে কম বয়সেই স্পন্ডেলাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

মুখমণ্ডলের উন্নতি ঘটে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমানোর সময় আমাদের মধ্যে অনেকেই উবু হয়ে, বালিশে মুখ গুঁজে শুতে ভালোবাসেন। এমনভাবে দীর্ঘ সময় কেউ যদি ঘুমায়, তাহলে ত্বকে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সেই সঙ্গে কম বয়সেই ত্বকের সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে। বালিশে মাথা দিয়ে শোয়ার পর গালের যে দিকটা বেশির ভাগ সময় বালিশের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে সেখানেই আধিক্য দেখা যায়। এক তো রক্তচাপ অন্য দিকে বালিশে থাকা অবাঞ্ছিত ব্যাকটেরিয়া। নরম নরম বালিশে মাথা দেওয়ার পর মাথার ভার নির্দিষ্ট একটা জায়গায় পড়ে থাকে, ফলে মুখের ত্বকে টান পড়ে। যা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকলে বলিরেখার জন্ম দেয়।

বালিশে ঘুমালে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে

বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, বালিশ ছাড়া ঘুমালে যতটা ভালো ঘুম হয়, বালিশ ব্যবহার করলে অতটা ভালো ঘুম হয় না। কী কারণে এমনটা হয়ে থাকে, তা যদিও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে জানা যায়নি, তবে গবেষণা চলছে। বালিশ মাথায় দিয়েও শান্তি নেই। মনে হয়, শক্ত হয়ে গেছে, এত শক্ত বালিশে ঘুম হয় না, বালিশ থেকে মাথা গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে, ইত্যাদি সূক্ষ চিন্তা ঘুমকে গভীরতায় ঢুকতে দেয় না।

বালিশ ছাড়া শোয়ার অভ্যাস করবেন যেভাবে

আমরা সবাই প্রায় ছোট থেকে বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে এসেছি। তাই হঠাত্‍ করে বালিশ ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ঘুম নাও আসতে পারে। তাই ধীরে ধীরে বালিশের অভ্যাস ছাড়তে হবে, একেবারে নয়! এক্ষেত্রে প্রথম এক সপ্তাহ বালিশের পরিবর্তে একটা মোটা তোয়ালে ভাঁজ করে মাথায় দিন। যত দিন যেতে থাকবে, তত তোয়ালের হাইট কমাতে থাকুন। দ্বিতীয় সপ্তাহে তোয়ালেটা একেবারে পাতলা করে দিন। এই সময় খেয়াল রাখবেন, শোয়ার সময় মাথাটা এমন পজিশনে রাখবেন, যাতে থুতনিটা নিচের দিকে থাকে, উপরের দিকে নয়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যখন তোয়ালের হাইট একেবারে কমিয়ে দেবেন, তখন মাঝে মাঝে ঘাড় এবং পিঠের কিছু ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/৭অক্টোবর/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সাবেক আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরীর ইন্তেকাল 
মনোহরদীতে এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসায় সিলিং ফ্যান, নলকূপ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
নির্বাচন নিয়ে কোনো তালবাহানা জনগণ মানবে না: টুকু
‘আত্মরক্ষায়’ ভারতের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা