দ্বার খুলছে পায়রা সেতুর, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ২০:২৭
অ- অ+

একসময় ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা যেতে ১০টি ফেরি পার হতে হত। সময়ের বিবর্তনে নতুন নতুন সেতু তৈরি হওয়ায় কমে আসতে থাকে ফেরির সংখ্যা। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা রুটের সবশেষ লেবুখালি ফেরিও বন্ধ হচ্ছে আগামী ২৪ অক্টোবর। কারণ ওইদিন পটুয়াখালীর পায়রা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াতের পথ খুলে যাবে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদা স্বাক্ষরিত চিঠি সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু উদ্বোধনে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। ২৪ অক্টোবর সকাল ১০টায় গণভবন থেকে তিনি ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

পায়রা সেতু প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, মূল সেতু, সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন শেষ মুহূর্তে সেতু এলাকায় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে যাবে এই সেতু। এই সেতুটি উন্মুক্ত হলে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন যান চলাচল স্থাপিত হবে। পরবর্তী সময়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এই সেতুটি উন্মুক্ত হলে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন যান চলাচল স্থাপিত হবে।

উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণার পর এখন পায়রা সেতু এলাকায় সাজ সাজ রব পড়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখতে মানুষের ভিড় পড়ছে। সন্ধ্যায় ঝলমল আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে সেতুটি।

ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পায়রা সেতু। এ সেতু নির্মাণের নকশা কিছুটা ব্যতিক্রমী। চার লেনবিশিষ্ট সেতুটি নির্মিত হচ্ছে ‘এক্সট্রাডোজড কেবল স্টেইড’ প্রযুক্তিতে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতুও এই প্রযুক্তিতে নির্মিত।

১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি কেবল (তার) দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত থাকবে। পানির উপরিতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু। উভয় পাড়ে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। এই সেতুতে ১৩০ মিটার গভীর পাইল বসানো হয়েছে। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রথমবারের মতো এই সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর’ স্থাপিত হচ্ছে। যার ফলে বজ্রপাত, ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর ভাইব্রেশন সিস্টেমে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে সেই বিষয়ে সংকেত দেবে। এছাড়া সেতুর পিলারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এতে কোনো কিছুর ধাক্কায় সেতুর ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব হবে, বাড়বে সেতুর স্থায়িত্ব। এই সেতুর জন্য আলাদা সাবস্টেশনের মাধ্যমে সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাতি জ্বলবে। থাকছে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থাও।

২০১২ সালের মে মাসে সেতুটি নির্মাণের প্রকল্পে অনুমোদন দেয় সরকার। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের যৌথ অর্থায়নে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন সেতুটির নির্মাণকাজ করছে।

২০১৩ সালে ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪১৩ দশমিক ২৮ কোটি টাকা। যদিও সবশেষ সেতুটি নির্মাণে চুক্তিমূল্য ছিল ১ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। তবে সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ১১৮ কোটি। সাশ্রয় হচ্ছে ৫২ কোটি টাকা।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/বিইউ/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
প্রেমের টানে মালয়েশিয়ার তরুণী বদলগাছীতে, বসলেন বিয়ের পিঁড়িতে
মুন্সীগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ বন্ধুর  
চুয়াডাঙ্গায় তেলবাহী ট্রাপচাপায় ৩ জন নিহত
ক্যাসিনোকাণ্ড অভিযানের নেপথ্য কাহিনী জানলে চমকে যাবেন আপনিও
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা