ভয়াবহ ওমিক্রন ছড়ানোয় দক্ষিণ আফ্রিকার দায় কতটা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১১:৪৭
অ- অ+

করোনার ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মিউটেট হওয়া সংস্করণ। এর মিউটেশনের তালিকা এত দীর্ঘ যে, একজন বিজ্ঞানী একে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার খবর জানতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে নতুন করোনার ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন আবিষ্কার করার জন্য, দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাধুবাদ দেয়ার পরিবর্তে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন দেশটির কর্মকর্তারা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করে।

মূলত এই ভেরিয়েন্টের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তার ভিত্তিতে ওই বিবৃতি দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে দেখা গিয়েছে যে ওমিক্রনে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি রয়েছে। অর্থাৎ একবার এই ভ্যারিয়েন্টে কেউ আক্রান্ত হলে তার পুনর্বার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ইউরোপে এখন বেশ কয়েকজনের মধ্যে এই ভেরিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে-যুক্তরাজ্যে দুই জন, জার্মানিতে দুই জন, বেলজিয়ামে একজন এবং আরেকজন ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।, এছাড়া চেক প্রজাতন্ত্রে একজন এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলেও, নতুন এই ধরণে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপরই তারা রবিবার মধ্যরাত থেকে ভিনদেশিদের ইসরায়েলে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। এই নিষেধাজ্ঞা ১৪ দিন ধরে চলবে বলে জানিয়েছে সেখানকার গণমাধ্যম টাইমস অফ ইসরায়েল। বতসোয়ানা ও হংকংয়েও ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নেদারল্যান্ডসে আসা শত শত যাত্রীদের পরীক্ষা করা দেখা হচ্ছে যে তাদের মধ্যে কেউ নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত কিনা।

গত ২৪শে নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়টি প্রথমবারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানায়।

আফ্রিকান ইউনিয়নের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এই নতুন ভেরিয়েন্ট সৃষ্টির জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী।

জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ভেরিয়েন্টটির প্রচুর মিউটেশন হচ্ছে, যার মধ্যে কয়েকটি বেশ উদ্বেগজনক।

এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে বি.১.১.৫২৯ নামে পরিচিত এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের বিষয়টি গত ৯ই নভেম্বর সংগৃহীত একটি নমুনা পরীক্ষায় প্রথম নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ।

ডাব্লিউএইচও বলেছে যে নতুন ভ্যারিয়েন্টটির প্রভাব কতটা তীব্র, সেটা বুঝতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে, কারণ বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখা করার চেষ্টা করছেন যে এটি কতটা সংক্রামক।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এক সংবাদ সম্মেলনে একজন বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মিউটেট করেছে ৫০ বার। এর স্পাইক প্রোটিন বদলেছে ৩০ বার। মানুষের দেহের মধ্যে ঢুকতে কোভিড ভাইরাস এই স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করে। এবং করোনার ভ্যাকসিন সাধারণত এই স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়।

ভাইরাসের যে অংশটি প্রথম মানুষের দেহকোষের সঙ্গে সংযোগ ঘটায় তার নাম রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইন। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সেই রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইনে মিউটেশন ঘটিয়েছে ১০ বার। সেই তুলনায় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে এই পরিবর্তন হয়েছে মাত্র দুবার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, দ্রুত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছে যে তাদের একটি "ঝুঁকিভিত্তিক এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির" দিকে নজর দেওয়া উচিত।

(ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যশোরে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলচালক নিহত 
মির্জাপুরে জুলাই অভ্যুত্থানে দুচোখ হারানো হিমেল পেল সাড়ে ৩ লাখ টাকা
মানিকগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি
অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে: লায়ন ফারুক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা