বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশের কণ্ঠস্বরের প্রতিচ্ছবি

ইলিয়াস সানী
  প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০১| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪৯
অ- অ+

‘ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস’-বঙ্গবন্ধু।

বাংলা, বাঙালি, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার পেছনে পিতা মুজিবের সুন্দরতম সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে নক্ষত্রসম সিদ্ধান্ত হলো- ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি বাঙালি ও বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বরের প্রতিচ্ছবি হয়ে সাধারণের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিল। সেই যে পথচলার শুরু, তা আজও দুর্নিবার গতিতে ছুটে চলছে দিগ্বিদিক।

ভাষা আন্দোলনের প্রারম্ভিকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হলেও, সেই স্থপতিরা শুধু বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় অধিকারেই তাদের চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। বরং ভাষা আন্দোলনে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের পরও সেইসব উচ্চকিত, উচ্ছ্বসিত, উদ্গম, উদ্ধত প্রাণগুলো ভাষা আন্দোলনের অববাহিকায় দেশের প্রথম বিরোধী শক্তির সংগঠন হিসেবেই একটি স্বর্ণোজ্জ্বল সংগঠন ছাত্রলীগের আত্মপ্রকাশ ঘটায়।

জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই বায়ান্নতে ভাষার অধিকার, বাষট্টিতে শিক্ষার অধিকার, ছেষট্টিতে বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, ঊনসত্তরে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সত্তুরে ভোটের অধিকার এবং সর্বোপরি একাত্তরে স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সাত দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি এই সংগঠন।

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের সমাবেশে বলেছিলেন, ‘দানবের সঙ্গে লড়াইয়ে যেকোনো পরিণতিকে মাথা পেতে বরণের জন্য আমরা প্রস্তুত। ২৩ বছর রক্ত দিয়ে এসেছি। প্রয়োজনবোধে বুকের রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। তবু সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও বাংলার শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করব না।’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এই দীপ্ত শপথ প্রমাণ করে যে, সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সোনালী অতীতের পাশাপাশি প্রয়োজন আগামীর দৃঢ় কণ্ঠস্বর।

মুক্তিযুদ্ধে এ সংগঠনের ১৭ হাজার বীর যোদ্ধা তাদের বুকের তাজা রক্তে দিয়ে এঁকেছেন লাল-সবুজের পতাকা। এঁকেছেন ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক সার্বভৌম মানচিত্র।

যখন বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল, ঠিক তখনই বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটিকে নিভিয়ে দিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হিংস্র হায়েনারা আঘাত হানে। প্রায় দু'শ বছর পরের অর্জিত স্বাধীনতা ধানমন্ডির বত্রিশে আবার নিভে যায়। আবারও সুদীর্ঘ সময় জলপাই রঙের আস্ফালন দেখেছে বাঙালি। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ। ১/১১ এর আন্দোলনেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যুগান্তকারী নেতৃত্ব বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে আছে তরুণ মুজিবের নান্দনিকতা ও আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে, সব অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, দেশগড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশের কণ্ঠস্বরের প্রতিচ্ছবি হয়ে শত সহস্র বছর টিকে থাকুক।

লেখক: প্রভাষক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ: মোটরসাইকেল ও অফিস ভাঙচুর, হাসপাতালে ভর্তি ৫
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা