অবশেষে পপি মুখ খুললেন, বললেন না জানা অনেক কথা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৫৭ | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৩২

দেড় বছরের আড়াল ভেঙে অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। মুখও খুললেন। বললেন না জানা অনেক কথা। কেনই বা তিনি এতদিন আড়ালে ছিলেন। বুধবার তার দেখা মিলল ফেসবুকে এক লাইভ ভিডিওতে। সেখানে তিনি জানান, শিল্পী সমিতির বিদায়ী কমিটির নেতৃত্বে কীভাবে একাধিক বার অপমানিত হতে হয়েছে। এ সময় আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদেও ফেলেন নায়িকা।

পপি বলেন, ‘ভেবেছিলাম আর কখনও ক্যামেরার সামনে আসব না। কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে নিজের কিছু দায়বদ্ধতা থেকে আজকে কিছু কথা না বললেই না। দীর্ঘ ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সুনামের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য অনেক কাজ করেছি। তিন-তিন বার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি।’

নায়িকা বলেন, ‘আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলা। আজ আমি কোথায়। আমি আছি। আমি আছি আপনাদের সকলের মাঝে। হয়তো ভাগ্যে থাকলে আবার ফিরব কাজে। তবে যে কথাটা বলতে চেয়েছিলাম, সেটি হচ্ছে, বর্তমান সমিতির একটি মাত্র ব্যক্তির কারণে। তার পলিটিক্স, তার নোংরামি এবং অনেক রকম অপকর্মে অসহযোগিতার কারণে আমাকে বার বার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, আমার মতো রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নিপুণ, আমাদের সকলকে ব্যবহার করে আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে যে এই চেয়ারটিতে বসেছে, সে বিভিন্ন রকম অপকর্ম করার চেষ্টা করেছে, যেখানে আমি সায় দিইনি বা আমরা সায় দিইনি।

নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করে পপি বলেন, ‘আমাকে অনেক অপমানিত হতে হয়েছে। আমার মতো শিল্পী, যে তিন-তিন বার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি, আমার মতো শিল্পীকে সদস্যপদ বাতিলের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এত বছর কাজ করার পর এটা একটা শিল্পীর জন্য কতটুকু অপমানের, সেটা আমি বুঝতে পারি। আমার মতো শিল্পীরা, যারা ভিকটিম হয়েছে, ১৮৪ জন শিল্পী, তারা হয়তো আমার কষ্টটা বুঝতে পারবে। বা আমিও তাদের কষ্টটা বুঝতে পারি।’

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘এই নোংরামির কারণে আমি আমার মানসম্মান নিয়ে থাকার জন্য বা আমার জানের ভয় ছিল, সবকিছু মিলিয়ে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি চলচ্চিত্র থেকে।’ পপির প্রতিশ্রুতি, ‘যদি কখনও পরিবেশ ভালো হয়, এই নোংরা মানুষ বা মানুষগুলো সরে যায় ইন্ডাস্ট্রি থেকে, তখন আবার কাজ করব।’ চলচ্চিত্রশিল্পকে বাঁচানোর জন্য কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

পপির এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তিনি ইলিয়াস-কাঞ্চন নিপুণদের প্যানেলকে সমর্থন করছেন। মনে-প্রাণে তাদের বিজয় প্রত্যাশাও করছেন। এর আগে ২০১৭-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে তিনি মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী পদে লড়াই করেছিলেন এবং জয়ীও হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরই মিশা-জায়েদদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে কমিটি থেকে বের হয়ে আসেন।

ওই সময় পপির বিরুদ্ধে শিল্পীদের জন্য ফান্ড গঠনের উদ্দেশে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে পারিশ্রমিক নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তার কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান। একই অভিযোগ তোলা হয় ওই নির্বাচনে সহসভাপতি পদে জয়ী চিত্রনায়ক রিয়াজ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য ফেরদৌসের বিরুদ্ধেও। পরে এই অভিযোগের প্রতিবাদ করে মিশা-জায়েদ কমিটি থেকে রিয়াজ-ফেরদৌসসহ বেরিয়ে আসেন পপি।

এরপর গত ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনে কোনো প্যানেলের প্রার্থী হননি এই নায়িকা। তবে কাজ করেছিলেন আরেক জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমীর পক্ষে। তিনি সেবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে মিশা সওদাগরের বিপক্ষে লড়েছিলেন। কিন্তু হেরে যান। সে সময় মৌসুমীর পক্ষে কাজ করায় মিশা-জায়েদদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন পপি। তাকে সদস্যপদ বাতিলের চিঠিও দেওয়া হয়।

এরপর ২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাস হানা দেওয়ার পর থেকেই লাপাত্তা ছিলেন পপি। কোথাও তার খোঁজ মিলছিল না। ফোন তো দূরে থাক, সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তার দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। শুধু সাংবাদিক বা সহকর্মীরা নয়, দেড় বছর ধরে পপিকে খুঁজছিলেন একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজকও। কারণ, তাদের দুটি ছবির কাজ ঝুলিয়ে রেখে আড়ালে চলে যান নায়িকা।

এরপর গত বছর গুঞ্জন ওঠে, পপি এক শিল্পপতিকে গোপনে বিয়ে করে সংসার করছেন। সম্প্রতি তার মা হওয়ার গুঞ্জনও ওঠে। জানা যায়, রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পপি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। পরে নায়িকার এক ঘনিষ্ঠজন সে খবরের সত্যতাও নিশ্চিত করেন। বাকি ছিল তার প্রকাশে আসা। এবার সেটাও করলেন নায়িকা। খুব শিগগির হয়তো কাজেও ফিরবেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :