ভূমিহীনের ঘর পেয়েছেন, থাকেন বিলাসবহুল বাড়িতে

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭:৩০

দেশের প্রায় ১০ লাখ ভূমিহীন মানুষের চাওয়া খাওয়া–পরার বাইরে তাদের মাথার ওপর অন্তত এমন একটা চালাবিশিষ্ট পরিকাঠামো থাকুক, যাকে অন্তত বাস্তুবিদ্যার সংজ্ঞায় ঘর বলে চালানো যায়। ‘যেখানে খুশি সেখানে’ না গিয়ে সেই ঘরে তারা একটু থিতু হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

সরকার এই ভূমিহীনদের আশ্রয়ের কথা মাথায় রেখে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। জমিজমা নেই, এমন পরিবারগুলোকে খাস জায়গায় ঘর তুলে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু যখন এগুলো ঘিরে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়, তখন প্রকৃত সেবাপ্রার্থীরা বঞ্চিত হয়।

ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নে এই ধরনের অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। এই ইউনিয়নের এক সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যের কাছে টিআর, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় ঘরের বরাদ্দ এলে তিনি তা কোনো গৃহহীনকে না দিয়ে দিয়েছেন তারই আপন বোনকে, যার রয়েছে তিনতলা বিলাসবহুল বাড়ি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বরের ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য নুরতাজ বেগম সামর্থহীনদের বঞ্চিত করে নিজেই হাতিয়ে নিয়েছেন এই কর্মসূচির ঘর। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সামর্থহীনরা। তিনি তার বোন আমেনাকে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের টিআর, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় ঘর দুই লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা ব্যয়ে দিয়েছেন। এটি প্রায় তিন বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এই ঘরে কেউ বসবাস করছেন না।

উপকারভোগী আমেনা বসবাস করছেন তিনতলা বিলাসবহুল বাড়িতে। সেটির পাঁচ তলার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, গরীবদের বঞ্চিত করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন ইউপি সদস্য নূরতাজ।

উপকারভোগী আমেনার মা এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার মেয়ে নুরতাজ। সে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নারী মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিল। এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশ করেছে। সে তার বোনকে এই ঘরটি উপহার দিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় সেখানে আমার মেয়ে আমেনা থাকে না দীর্ঘ দিন। এছাড়া ঘরে যাতায়াতের রাস্তাও নাই। এজন্যই আমেনা আমার বাড়িতে বসবাস করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নুরতাজ বলেন, আমি ঘর আমার বোনকে দিয়েছি। সে ওই ঘরেই বসবাস করতো। কিন্তু বিদ্যুৎ আর রাস্তার অভাবে সেখানে যাতায়াত করতে পারে না। তাই ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। পরে তিনি সাংবাদিকদের সামনা-সামনি দেখা করার প্রস্তাব দিয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নুরতাজের এক প্রতিবেশী জানান, আমেনা তার বাবার সম্পত্তি পেয়েছেন। সেখানে তারা সম্মিলিতভাবে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। উপকারভোগী আমেনা সেখানেই থাকেন। সরকারি ঘরে প্রায় তিন বছর ধরে কেউ থাকে না। তারা অনেক সম্পদের মালিক। তার পরেও সরকারি ঘর তাদেরই লাগে। যাদের সামর্থ নাই তাদের না দিয়ে নিজেরাই এসব লুটে নিয়েছেন। তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিৎ।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারবো। তদন্ত ছাড়া কিছু বলতে চাই না।

(ঢাকাটাইমস/৪ফেব্রুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :