কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ: বাসাইলের সাবেক ইউএনওর বিরুদ্ধে তদন্ত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৪:১৫ | প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:২০
প্রতীকী ছবি

ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ মাথায় নিয়ে তদন্তের মুখে পড়েছেন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেন, যিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

একজন কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওই সরকারি কর্মকর্তার বিরদ্ধে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের তদন্তও শুরু হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয় কলেজছাত্রীর। পরিচয়ের একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে নির্বাহী কর্মকর্তা তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান। এর পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এদিকে কলেজছাত্রীর বাবা-মা অসুস্থ থাকায় পারিবারিকভাবে তার বিয়ে ঠিক করা হয় অন্যত্র। বিষয়টি মনজুর হোসেনকে জানালে তিনি বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কলেজছাত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে এসে টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউজের পেছনে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে ইউএনও তার প্রকৃত পরিচয় গোপন রাখেন। সেই বাসায় দুই মাস ছিলেন তারা। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী বিয়ে ও সামাজিকভাবে স্বীকৃতির জন্য মনজুর হোসেনকে চাপ দেন। তিনি ভারত থেকে ঘুরে এসে বিয়ে করবেন বলে কথা দেন।

এর পর গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ওই ছাত্রীকে নিয়ে বেনাপোল হয়ে কলকাতা যান মনজুর। সেখান থেকে বিমানে হায়দারাবাদ যান। সেখানকার একটি হাসপাতালের কাছে তারা একটি বাসায় ওঠেন। ওই হাসপাতালে তারা দুজনে চিকিৎসাও নেন। একদিন কলেজছাত্রী মনজুরের ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে দেখে জানতে পারেন তিনি বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে।

হায়দারাবাদে থাকা অবস্থায় ছাত্রীর মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন নির্বাহী কর্মকর্তা। এসময় তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও মেসেজ, চ্যাটিং মুছে ফেলেন। ইউএনও বিষয়টি কারও কাছে বললে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দেন।

ভারতে ১২ দিন অবস্থান করার পর গত বছরের ৫ অক্টোবর দেশে ফরেন তারা। এরপর কলেজছাত্রী তার বাবার বাড়ি ফিরে যান। পরে ইউএনও ওই ছাত্রীকে এড়িয়ে চলা শুরু করেন। এ অবস্থার মধ্যে ২০ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর ইউএনও মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন কলেজছাত্রী। তদন্ত চলাকালে চলতি বছরের ৪ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয় মনজুরকে।

কলেজছাত্রী বলেন, ‘মনজুর হোসেন আমাকে শুধু ব্যবহারই করেছেন, সামাজিকভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। বাংলাদেশের একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়ে এরকম করতে পারেন এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্তের জন্য টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরীনকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি তদন্ত শুরু করেছেন।

জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। আগামী সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

মনজুর হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছন। তিনি বলেন, ‘সে (ছাত্রী) আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তদন্তের বিষয়টি ইন্টারনাল।’

ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/এফএ

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রশাসন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :