আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ডুবে গেছে কক্সবাজার শহরের অনেক রাস্তা

দুই দফায় আধা ঘণ্টার মাঝারি বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক, বেশ কয়েকটি উপ-সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়ে যায় যায় চলাচল। এতে তীব্র ভোগান্তি ও দুভোর্গে পড়েন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ পথচারী।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রথম দফায় ১০ মিনিটের মাঝারি বৃষ্টি হয়। এরপর ১১টার পরে আবার শুরু হয় মাঝারি বৃষ্টিপাত যা ২০ মিনিট স্থায়ী হয়। দুই দফার এ বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, গোলদিঘীর পাড়, কালুর দোকান, আলীরজাহাল ওও বৌদ্ধমন্দির এলাকাজুড়ে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।
দুর্ভোগের শিকার পথচারীরা জানান, কক্সবাজারের প্রধান সড়ক, উপ-সড়ক ও নালা সংস্কারের কাজ একযোগে শুরু হয় তিন বছর আগে। যার মধ্যে, প্রধান সড়ক সংস্কারের কাজ করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রধান সড়কের কাজটি এখনও অসমাপ্ত রয়েছে ৭০ শতাংশের মতো। কক্সবাজার পৌরসভার অধীনে ২৯টি উপসড়কের কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ হলেও সবকটি নালার পানি চলাচল উপযোগী হয়নি এখনও। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে ব্যাপক এলাকা। ভরবর্ষার মৌসুমে এ ভোগান্তি তীব্র আকার ধারণ করার আশংকা করছেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে কোন মানুষ বাসা-বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। অনেকে কর্মস্থলে যেতে রাস্তায় বের হলে দুর্ভোগে পড়ে।
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী মাইমুনা ইয়াছমিন জানান, ক্লাস মিস করলে জরিমানা ১৫০ করে ৩০০। প্রাইভেট সব মিলিয়ে ৫০০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এভাবে হলে বর্ষায় বসবাস পর্যন্ত বরতে পারব না।
অপরদিকে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ স্কুলে আসার পথে এক ছাত্র ড্রেনে পড়ে যায়। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্রুত ড্রেন থেকে তাকে উদ্ধার করে।
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারের মানুষ উন্নয়ন শিখছে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে, যাদের অদক্ষতা আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের কুফল হচ্ছে প্রধান সড়ক।
প্রধান সড়কের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয় কক্সবাজারের মানুষের কোন মূল্য নেই তাই যেমন ইচ্ছে তেমন করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বছরের পর বছর পার হলেও এখনো খুঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ হচ্ছে না। আসলে যারা কক্সবাজারের প্রধান সড়কের দায়িত্ব নিয়েছে ওরা নিজেরাও জানে না আসলে কি করা উচিত কি করা জরুরি। সর্বোপরি একটু বৃষ্টি হলেই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ যেন দেখার মতো।
যেভাবে নালা নর্দমা গুলো উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। চলতি বর্ষায় দৃশ্যমান সড়ক উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হলে চরম মূল্য দিতে হবে কক্সবাজারবাসীকে। এতে পর্যটকও বিমুখ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা তার ফেসবুকে লিখেছেন, কেউ ঘুমে আর সাধারণ মানুষ হাঁটু পানিতে, ব্যবসায়ীরা পানি নিষ্কাশনে। নিজ দায়িত্বে পথচারীরা ফুটপাতের ম্যনহুলের ডাকনা খুলে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা। সবেমাত্র বর্ষা শুরু। জনবান্ধব/সভ্য কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের পূর্বে প্রধান কাজ হচ্ছে উন্নয়নের নেতিবাচক এবং জনদুর্ভোগ প্রশমনে সময় ভিত্তিক পরিকল্পনা। এই কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতির দায়ভার কে নেবে? উন্নত বিশ্বে যদিও মামলার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দায়ের সুযোগ থাকে কিংবা সরকার আপদকালীন সময়ে জনগণের/ব্যবসায়িক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য প্রণোদনা দিয়ে থাকে। এখানে তো এর কিছুই প্রচলিত নাই।
এভাবে অনেকে ক্ষোভ জানিয়ে নিজেদের ফেসবুকে ভিডিও এবং ছবি পোস্ট করেন।
(ঢাকাটাইমস/৩১মে/এআর)

মন্তব্য করুন