‘শূন্য’ ২৫ জেলায় পাখির চোখ পুলিশ সুপারদের, বদলি শিগগিরই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৮:১৫ | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৬:৪১

কে হচ্ছেন ঢাকার পুলিশ সুপার? জেলা পর্যায়ে পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকার এসপি হিসেবে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৪ ব্যাচের একজন কর্মকর্তার নাম সর্বাধিক আলোচিত হচ্ছে। এই মুহূর্তে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) হিসেবে কর্মরত এই কর্মকর্তা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা।

ডিএমপির ডিসি হিসেবে পদায়নের আগে তিনি বৃহত্তর ঢাকার একটি জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মেধাবী, দক্ষ এই কর্মকর্তার বিষয়ে সরকারঘনিষ্ঠ অনেকের সুনজর আছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের একাধিক সূত্রে ঢাকা টাইমস জানতে পেরেছে।

তবে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৪ ব্যাচের আরও একজন প্রভাবশালী পুলিশ সুপার ঢাকা জেলায় পদায়নের ব্যাপারে এখনো আশা ছাড়েননি।

বিভিন্ন মাধ্যমে ঢাকা টাইমস জানতে পেরেছে, একটি বড় জেলায় কর্মরত ওই পুলিশ সুপার পুলিশ সদরদপ্তর, ডিএমপিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত পুলিশ সুপাররা অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পেয়েছেন। বর্তমানে ২৫ জেলাসহ ১১৯ জন এসপি পদমর্যাদার পদ খালি হয়েছে। এসব জেলায় শিগগিরই পদায়ন শুরু হচ্ছে। পছন্দের স্টেশনে পোস্টিং পেতে ইতোমধ্যে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

এর আগে ৩১ মে ও ২ জুন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১১৯ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই ১১৯ জনসহ ১৩৯ জন অতিরিক্ত ডিআইজিকে বিভিন্ন পদে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ৫ ও ৬ জুন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৩৬ জনকে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার এসপি হিসাবে পদায়ন পেতে জোর লবিং চালাচ্ছেন পদায়নপ্রত্যাশী কর্মকর্তারা। কাঙ্খিত পদায়ন পেতে তারা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের তদবিরে। কারণ, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

একাধিক সূত্র ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের পুলিশ সুপারেরা পাখির চোখে দেখছেন এসব জেলাগুলোকে (২৫ জেলা)। ২৪ ও ২৫ ব্যাচের পুলিশ সুপাররা জেলায় দায়িত্ব পেলেও ২৭তম ব্যাচের ক্ষেত্রে এই প্রথম পদায়নের গ্রিন সিগন্যাল সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে পাওয়া গেছে।

ঢাকার পরেই গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ জেলায় পদায়ন পাওয়ার জন্য ২৪তম ব্যাচের একাধিক কর্মকর্তার আগ্রহের বিষয়টি এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদরদপ্তরে প্রকাশ্য।

তবে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশপ্রধানসহ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সরকারের নীতি-নির্ধারকরা মেধা, সততা, ন্যায়পরায়নতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারদর্শী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অনুগত্যশীলদের বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন।

আর ছোট জেলা, কিন্তু এই মুহূর্তে জাতীয়ভাবে স্পর্শকাতর নড়াইলের এসপি হিসেবে একজন অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। সব ঠিক থাকলে বড় জেলায় যাওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হতে পারে সরকারের রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী বলে দাবি করা কোনো কর্মকর্তার।

বিসিএস পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী একজন কর্মকর্তা দুটি বড় জেলার যেকোনো একটিতে পুলিশ সুপার হতে আগ্রহী বলে তার ঘনিষ্ঠরা ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ—ডিএমপিতে তিনি উপ-কমিশনার হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করে সরকারের প্রভাবশালীদের সুনজরে আছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা যাতে পুলিশ সুপার হিসেবে জেলায় কর্মরত থাকেন, সেই বিবেচনায় এবার ২৭ ব্যাচের কয়েকজন চৌকষ কর্মকর্তাকে জেলায় পদায়নের বিষয়টি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিবেচনা রয়েছে। পুলিশ সদরদপ্তরে ২৭ ব্যাচের কর্মরত একজন কর্মকর্তার জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়নের বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র বলছে, বৃহত্তর ঢাকায় কর্মরত ২৭ ব্যাচের একজন পুলিশ সুপারকে জেলায় পদায়নের ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা চলছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের মধ্যে যারা জেলায় যাওয়ার উপযুক্ত, তাদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। স্পর্শকাতর জেলা বলে বিবেচিত কিশোরগঞ্জে একজন সিনিয়র পুলিশ সুপারের পদায়ন নিয়ে আলোচনা আছে।

এছাড়া গুরুত্ব বিবেচনায়, কক্সবাজার, ফরিদপুর, দিনাজপুর, সুনামগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল জেলায় অভিজ্ঞদের পদায়ন হওয়া উচিত বলে মনে করছে সরকার। জেলায় পদায়নের ব্যাপারে ইচ্ছুক সদরদপ্তরে কর্মরত এআইজি, ডিএমপিতে কর্মরত ডিসি, সিআইডি ও এসবিসহ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সুপাররা বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের আগ্রহের বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদরদপ্তরের নীতিনির্ধারকদের জানাচ্ছেন।

যোগাযোগ করা হলে পুলিশের সাবেক সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মালিক খসরু ঢাকা টাইমসকে বলেন, জেলায় পদায়নের ব্যাপারে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সতন্ত্র ইউনিট পরিচালনায় দক্ষতা, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা, সততা বিবেচনায় নেওয়া উচিত। আশা করি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।

জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দুই বছরের বেশি যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের অনেককে জেলা বদলের বিবেচনায় রাখা রয়েছে। এই তালিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ এইচ এম আবদুর রকিব; সাতক্ষীরার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর; চুয়াডাঙ্গার মো. জাহিদুল ইসলাম; ঝালকাঠির ফাতিহা ইয়াসমিন; গাইবান্ধার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, পঞ্চগড়ের মোহাম্মদ ইউসুফ আলী; নেত্রকোণার মো. আকবর আলী মুনসী; মুন্সীগঞ্জের আব্দুল মোমেন; খাগড়াছড়ির মোহ্ম্মদ আবদুল আজিজ; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান; দিনাজপুরের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং লালমনিরহাটের আবিদা সুলতানার নাম রয়েছে। তাদেরকে জেলা থেকে তুলে আনা হবে নাকি নতুন জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হবে এই নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে মত আছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসএস/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রশাসন এর সর্বশেষ

ডিএমপির ছয় এডিসি-এসিকে বদলি

জিএমপির এডিসি খায়রুল আলমের রাজশাহীতে বদলির আদেশ বহাল, ২১ এপ্রিলের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে

নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‌্যাব মুখপাত্র মঈন

চাকরি হারালেন এসপি শাহেদ ফেরদৌস, করেছিলেন যে অপরাধ

নির্দিষ্ট সময়ে উদীচীর অনুষ্ঠান শেষ না করা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা অনভিপ্রেত: ডিএমপি

পিআইবির পরিচালক হলেন কে এম শাখাওয়াত মুন

ডিএমপির দুই কর্মকর্তাকে বদলি

জীবন বীমায় নতুন এমডি, পরিচয় নিবন্ধনে নতুন ডিজি ও মহিলা সংস্থায় ইডি নিয়োগ

ঈদে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটিতে যেতে পারবেন না পুলিশ সদস্যরা

পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের নতুন চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :