একজন ইউএনও সাংবাদিককে গালি নিয়ে ব্যস্ত, আরেকজন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পথ খোঁজেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ জুলাই ২০২২, ১৮:২১| আপডেট : ২২ জুলাই ২০২২, ১৮:৪৯
অ- অ+

দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় উপজেলা প্রসাশন চালান ইউএনও। তাদের হাতেই সংশ্লিষ্ট উপজেলার অনেককিছু নির্ভর করে। তাদের হতে হয় অনেক দায়িত্বশীল। জনবান্ধব। কিন্তু তাদের কেউ কেউ বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে একদিকে যেমন নিজের ক্ষতি করেন অপরদিকে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন। তাদেরই একজন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু। তিনি নিজের অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেছেন। গালিগালাজও করেছেন। সারাদেশে তার গালমন্দের সেই অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

অপরদিকে একজন দায়িত্বশীল ইউএনওর কথাও জানা গেছে। কীভাবে তার উপজেলা প্রসাশনে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়, তা নিয়ে তিনি সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই।

দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করায় কক্সবাজারের এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু। এরকম একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। সেখানে ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু সাংবাদিককে গালিগালাজ করছেন- এটি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। তবে ঢাকাটাইমস অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় নিচু জমিতে উপহারের ঘর নির্মাণ নিয়ে সেখানকার ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। প্রতিবেদনে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরায় ওই পোর্টালের কক্সবাজার প্রতিনিধির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত পৌনে ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তার অফিসিয়াল নম্বর থেকে কল করেন জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ফরহাদকে। কথা বলার প্রথম থেকেই ইউএনও সাংবাদিককে গালিগালাজ করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি ওই সাংবাদিককে ‘বেজন্মাও’ বলেন।

এদিকে অডিও রেকর্ডটি স্থানীয় এবং অন্যান্য জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন আচরণে হতভম্ব। তারা এর সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ফরহাদের করা ওই সচিত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা হোয়াব্রাং এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। ফলে সেখানে থাকা ২৭টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।’

প্রতিবেদনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরুর বক্তব্যও প্রকাশ হয়, যেখানে তিনি বলেন, ‘বন্যা যখন আসছে মুজিববর্ষের ঘরগুলো চেনেনি হয়তোবা ও আশপাশের ঘরগুলো দেখেনি শুধু দেখেছে মুজিববর্ষের ঘরগুলো। একটা চোর, আরেকটা সাংবাদিক, হলুদ সাংবাদিক ও ইয়াবার সঙ্গে জড়িত এমন সাংবাদিক আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে।’

এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরু ফোন করেন সাংবাদিককে।

অপরদিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই তার উপজেলা প্রসাশনে বিদ্যুৎ কিভাবে সাশ্রয় করা যায় সে চেষ্টা করছেন।

নিজ অফিস কক্ষের এসি বন্ধ করে এর ওপর নোটিশ আকারে লিখে দিয়েছেন, ‘বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও চলমান বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে সরকারি নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র এবং ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনের সব বাতি বন্ধ রাখা হলো। আপনারাও যার যার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে আন্তরিকভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হোন।’

তার অফিস কক্ষে দেখা যায়, কক্ষের প্রতিটি জানালা বন্ধ করে না রেখে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। যাতে বাইরের আলো দিয়েই অফিস চালু রাখা যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটি বন্ধ রেখে জরুরি প্রয়োজনে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ওপর লাগানো হয়েছে দুটি বৈদ্যুতিক পাখা।

ইউএনও মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘চলমান বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে এবং সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অন্যকে মেনে চলার জন্য অনুরোধ করার আগে নিজেই সাশ্রয়ী হয়ে অন্যকে পরামর্শ দেব।’

বিদ্যুৎসংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান ইউএনও মনদীপ ঘরাই।

(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/এমএইচ/এমএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ওপারে কারফিউ, সুনামগঞ্জের ১২ কিলোমিটার সীমান্তে বিজিবির সতর্ক অবস্থান
খালিশপুরে শহীদ মিনারের জমি দখলের ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় শাহবাগে ছাত্র-জনতার উল্লাস
৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা