কিংবদন্তি আলাউদ্দিন আলীর চলে যাওয়ার দুই বছর

বিনোদন প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১০:৩১

বাংলাদেশের সংগীত জগতের একজন কিংবদন্তি সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। পাশাপাশি তিনি ভালো বেহালাবাদকও ছিলেন। অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা তিনি। আজ তার চলে যাওয়ার দুই বছর। ২০২০ সালের এই দিনে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আলাউদ্দিন আলী।

কিংবদন্তি এই সুরকার দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রথমে ২০১৫ সালের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেওয়া হয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে টিউমার রয়েছে। এরপর অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছিল।

এর আগে বেশ কয়েক দফায় আলাউদ্দিন আলীকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। বাংলাদেশ ও ব্যাংককে তার চিকিৎসা হয়েছে। সাভারে সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অব প্যারালাইজড কেন্দ্রেও চিকিৎসা নিয়েছেন দীর্ঘদিন।

মৃত্যুর আগে বাসায় চিকিৎসা চলছিল আলাউদ্দিন আলীর। শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ২০২০ সালের ৮ আগস্ট ভোর পৌনে পাঁচটায় তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থা বিবেচনা করে তাকে দেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ৯ আগস্ট তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে।

গুণী এই মানুষটির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন। দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে চলে আসেন আলাউদ্দিন আলী। তিন ভাই ও দুই বোনের সঙ্গে সেই কলোনিতেই কাটে তার শৈশব।

সংগীতে তার প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে হলেও পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে কাজ করেন দীর্ঘদিন। লোকজ ও ধ্রুপদী গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা আলাউদ্দিন আলীর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছিল।

এই সুরসম্রাটের অনবদ্য কিছু সৃষ্টির মধ্যে একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, হয় যদি বদনাম হোক আরও, আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না, যেটুকু সময় তুমি থাকো পাশে, এমনও তো প্রেম হয় চোখের জলে কথা কয়, কেউ কোনোদিন আমারে তো কথা দিল না, আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা, শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে-সহ আরও অসংখ্য গান রয়েছে।

প্রয়াত কিংবদন্তি এই সুরকার তার ক্যারিয়ারে আট বার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন আরও ছোট-বড় নানা সম্মাননা। আলাউদ্দিন আলী নেই, তবে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন তার কর্মের মধ্য দিয়ে। যে অসংখ্য কালজয়ী গান তিনি রেখে গেছেন, সেগুলোর জন্যই সংগীতপ্রেমিদের মনে যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন একজন আলাউদ্দিন আলী।

(ঢাকা টাইমস/০৯ আগস্ট/এএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :