তাপসের উন্নত জীবনের স্বপ্ন ‘নির্মম বলি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১১:২৫ | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১১:২০
উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনিগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটিয়ে পড়েন তাপস। তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্যরা তাকে রেখেই চলে যান (ছবি: সংগৃহীত)

সুনামগঞ্জের যুবক তাপস সরকার। স্বপ্নের দেশ আর উন্নত জীবনের আশায় গ্রিস থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে প্রচণ্ড গরমে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাগউচা গ্রামের প্রয়াত সতীশ চন্দ্র সরকারের ছেলে তাপস।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে তাপসের মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছেন পরিবার। তার নির্মম মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পরিবার জানায়, এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তাপস। এরপর আনুমানিক আড়াই বছর আগে তিনি বিদেশে যান। গত ৭ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাপসের ছবি দেখে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয় পরিবার।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার ছাতকে এক স্বজনের মুদি দোকানে পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন তাপস। শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। করোনা মহামারির ছয় মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে অবৈধভাবে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে চলে যান তিনি। সেখান থেকে গ্রিসে বসবাসকারি বাংলাদেশি এক দালালের মাধ্যমে সার্বিয়া যাওয়ার চুক্তি করেন। পরে সার্বিয়া থেকে অন্য দালালের মাধ্যমে যাবেন ইতালি।

এ রুটে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়া প্রবেশ করান। পরে আলবেনিয়ায় দুই থেকে তিন দিন রেখে সুযোগ বুঝে মন্টিনিগ্রো নিয়ে যান। মন্টিনিগ্রো নিয়েই আটকে রেখে চুক্তি করা অর্থ আদায় করেন দালালরা। টাকা পরিশোধ হলে নিয়ে যান সার্বিয়া। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানো হয়।

সেই চুক্তি অনুযায়ী গত ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে তাপসসহ প্রায় ৩০ জনের একটি দলকে আলবেনিয়া পৌঁছায় দালাল চক্র। আলবেনিয়া স্থল সীমান্ত থেকে তীব্র গরমের মাঝে ৮ ঘণ্টায় উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনিগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটিয়ে পড়েন তাপস। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্যরা তাকে রেখেই চলে যান। তার সঙ্গে থাকা পরিচিত দুজন অনেক চেষ্টা করে তার কোনো সাড়া না পেয়ে তারাও চলে যান। তবে তারা ওই ঘটনার একটি ভিডিও করে গ্রিসে থাকা স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেন।

জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘এলাকার একজন ছেলে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন, এমন খবর শুনেছি।’

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :