ক্ষতিকর ইউরিক অ্যাসিড থাকে যেসব খাবারে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:১৭ | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩১

বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ইউরিক অ্যাসিডের কারণে কষ্ট পাচ্ছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ ইউরিক অ্যাসিডে গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। জিনগত কারণ কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়ে। কাজেই চিকিৎসকরা লাইফস্টাইল ডিজিজের মধ্যে রাখছেন ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়াকে। আর ঘরে ঘরে ছড়িয়েও পড়ছে এই সমস্যা। রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার জেরেই একে একে জাঁকিয়ে বসে কিডনির রোগ, উচ্চ রক্তচাপ।

চিকিৎসকের মতে, খাওয়া কমালেই ইউরিক অ্যাসিড কমে না। খাবার হজমের সময় ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এটা মূত্রের স্বাভাবিক উপাদান। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে বা ওজন বাড়লে কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড শরীরের অস্থিসন্ধি ও মূত্রনালীতে থিতিয়ে পড়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। থিতিয়ে পড়া ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালের আকার নেয়। এটি গাঁটে ব্যথা ও প্রস্রাবের সংক্রমণ ডেকে আনে। এ ছাড়া কিডনিতে পাথরও জমতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড এক ধরনের রাসায়নিক যা খাবার হজম করবার সময় শরীরে উৎপন্ন হয়। ইউরিক অ্যাসিডে 'পিউরিনস' নামে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কিছু কিছু খাবারের মধ্যে পাওয়া যায়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে কিডনিতে পরিশ্রুত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মাঝে মধ্যে শরীর এতটা বেশি পরিমাণের ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন করে ফেলে যে তা ঠিক মতো পরিশ্রুত হতে পারে না। পারিবারিক রোগভোগের ইতিহাস, কর্মঠ না হওয়া এবং প্রচুর পরিমাণ আমিষ খাওয়ার ফলে শরীরে অত্যধিক ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে শরীরে গুরুতর কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এমনকী হতে পারে গাউট। এক্ষেত্রে পায়ে খুব ব্যথা হয়। এমনকী শরীরের অন্যত্রও যন্ত্রণা হতে পারে। তাই এই অসুখ নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে।

গবেষকদের মতে, রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড একজন ব্যক্তির আয়ু ১১ বছর কমিয়ে দিতে পারে। মানুষের রক্তের মধ্যে ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে শরীরের বিপদজনক অবস্থা তৈরি হতে পারে। এর পরিমাণ বেড়ে গেলে গাঁটে বাত, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি অকেজো হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

গাউট সাধারণত পিউরিন যুক্ত খাবার বেশি খেলে হতে পারে। এবার দেখা গিয়েছে যে পিউরিন বেশি থাকে প্রাণীজ প্রোটিনে। তবে শুধু পিউরিন থেকে সমস্যা হয় না। সেক্ষেত্রে অক্সালেট নামক যৌগ থেকেও সমস্যা হয়। তাই এই নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। জানুন ইউরিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী খাবেন না কখনও।

ডায়েটে কম তৈলাক্ত খাবার রাখতে হবে। ভাজাপোড়ায় যদি লোভ থাকে, তাহলে অভ্যাস বদলাতে কাবাব জাতীয় খাবার খেতে পারেন। চেষ্টা করতে হবে কম তৈলাক্ত খাবার ডায়েটে রাখতে। ভাজাপোড়ায় যদি লোভ থাকে, তাহলে অভ্যেস বদলাতে কাবাব জাতীয় খাবার খেতে পারেন।

রেড মিট বাদ দিন। বাদ থাকুক বেকন, সসেজও। এড়িয়ে চলুন দুধ। খাবারে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দিন।

অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ কখনও খাবেন না। খাবেন না দুধ চা। পরিবর্তে চলতে পারে কফি। অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ কখনও খাবেন না। খাবেন না দুধ চা। পরিবর্তে চলতে পারে কফি।

বাজারের জুস, কোল্ড ড্রিঙ্ক অ্যাভোয়েড করতেই হবে। খাদ্য তালিকায় যেন লেবু থাকে। ভিটামিন সি ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে।

ক্ষতিকর অক্সালেট নামক যৌগ ভালো পরিমাণে থাকে কিছু সবজিতে। তাই সেই সকল সবজি আপনাকে এড়িয়ে যেতে হবে।

টমেটো খেলেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। বেশি পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার থাকায় টমেটো শরীরের জন্য ভালো। এছাড়া ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে টমেটোতে। তবে অক্সালেট থাকার দরুন এই খাবার খেলেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

ঢ্যাঁড়শ সবজিতেও থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে এই খাবার। ঢ্যাঁড়শ খাওয়া ঠিক হবে না ইউরিক অ্যাসিডে

পালংশাকে ভিটামিন ও খনিজ ভরপুর রয়েছে। পালংশাকেও রয়েছে ক্ষতিকর অক্সালেট। আর তা খারাপ ইউরিক অ্যাসিডের জন্য। তাই এই খাবার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে।

বিট কম খেতে হবে ইউরিক অ্যাসিডে। যদিও বিটে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ। অনেক ক্ষেত্রে গাউট রোগীদের সমস্যা বাড়ায় এই খাবার।

শতমূলি খাবারেও রয়েছে অনেকটা অক্সালেট। এবার এই অক্সালেট কিন্তু বাড়িয়ে দিতে পারে গাউটের সমস্যা। তাই বলা হয়ে থাকে যে গাউট থেকে দূরে থাকতে হলে এই খাবার খাওয়ায় রাশ টানতে হবে। নইলে সমস্যা তৈরি হয়ে যাবে।

এছাড়া যারা প্রত্যেকদিন প্রচুর পরিমাণে মাছ-মাংস খান, তাদের ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাবার ঝুঁকি বেশি। মদ্যপান ও কার্বোনেটেড কোলা জাতীয় ঠাণ্ডা পানীয় নিয়ম করে খেলেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। স্বাভাবিকের থেকে বেশি ওজন হলেও ঝুঁকি থাকে।

কৃত্রিম রং, চিনি বা কর্ন সিরাপ দেওয়া খাবার একেবারে বন্ধ করা উচিত। কোলা জাতীয় পানীয়, রং দেওয়া জেলি, জ্যাম, সিরাপ, কৌট বন্দি ফ্রুট জ্যুস খাওয়া চলবে না। স্মোকড ও ক্যানড ফুড খাওয়া চলবে না। আচার, চানাচুর, নোনা মাছ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। বিনস, বরবটি, রাজমা খেলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়।

প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করুন। ওজন স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন।

(ঢাকাটাইমস/৮ সেপ্টেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :