রেশমা আক্তারের চারটি কবিতা

ভাষা ও সাহিত্য ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৩৪| আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৫৯
অ- অ+

আত্মহন্তারক

আমিই কী তবে আমার সেই খুনী

আমিই কী তবে সেই আত্মহন্তারক?

আশ্রয়েপ্রশ্রয়েঅনাদিকাললালনকরছি

দেহের মাঝে পঞ্চ প্রবঞ্চক।

চেয়ে চেয়ে দেখেছি নিজের ভাঙন

শুনেছি কান্না, পেয়েছি হৃদয় পোড়া গন্ধ,

অনুভূতির ঝড়ে ভেসে গেছি

ভেঙেছে স্বপ্ন, হয়েছি চক্ষুষ্মান অন্ধ।

শুধু একটা জীবন বাঁচবো বলে

পান করেছি মৃত্যু অসংখ্যবার।

ভালোবেসে, আত্মবিসর্জনে

হয়েছি বিরহের কৃতদাস।

সত্যের খোরপোশে পালিত হয়ে

মিথ্যের সাথেই যেন আজন্ম সহবাস।

আমি মদ্য মাতাল, আমিই অমৃত সুধা

আমিই প্রেম, আমিই সে জীবনের ক্ষুধা।

সময়ের তাড়া খেয়ে খেয়ে ছুটে চলা আমি

খুঁজেছি স্বজন, হারিয়েছি কত প্রিয়জন

আজ এ মধ্য প্রহরে হয়েছে বোধদয়

কতটা ছলনা ছিলো এ সমস্ত মিথ্যে আয়োজন।

নীল নীল কষ্ট

খুব কষ্ট পাচ্ছ বুঝি, নীল...!

কালো কালো থমথমে জমাট ব্যথার মেঘেরা

খামচে ধরে আছে বুঝি তোমার ভাঙা পাঁজর!

আর চমকানো বিজলীর মত বিদীর্ণ চরাচর

তীব্র কষ্টে তুমি কাতর অথবা যন্ত্রণায় পাথর।

আমি অদূরে দাঁড়িয়ে এক দীর্ঘঃশ্বাস, বিকেলের রোদ

চাপা পড়া বর্ণচ্ছটা কিংবা তোমার নীলাভ্র

মেঘের আড়ালে মুখ লুকোনো ব্যথা বোধ।

অবেলায় জানালার কার্নিশে হেলিয়ে মাথা

দেখছি তোমার অন্তহীন নীলিমা।

মেঘ রোদের অপূর্ব লুকোচুরি

আর ওদের দেখা অদেখার ছোঁয়াছুঁয়ি।

তথাপি, নীরবতায় খুঁজে ফেরা কিছু পিছুটান

যেখানে জমা আছে নির্লিপ্ত ধূলোদের গান,

আছে ব্যথা, কিছু শূন্যতা, ইগো আর ব্যবধান।

স্রোতস্বিনী

গহীন পাহাড়ী পথে ধেয়ে আসা

উন্মত্ত এক বিষাদের ঝর্নাধারা দেখে

বললে, ঠিক আমার প্রিয়ার মতন তুমি

এসো নদী হও, মোহনায় গড়ো বসতি

আমার বুকে জমা আছে

ব্যথার সাতটি স্রোতস্বিনী।

শুনে..

ঝরে পড়ে জলধারা, ঝরে যত মোহমেঘ

ঝরে আনন্দ-অশ্রু , ঝরে ব্যথা, আবেগ।

কতটা ঝরে পড়লে প্রিয় হওয়া যায়, তাই ভাবি

কতটা ভালোবাসলে হওয়া যায় প্রিয় নদী।

আমি চাইলাম একমুঠো সোনারোদ

তুমি বললে, এসো বরষায় ভিজি।

আমি বললাম, আমায় নিয়ে লেখো কবিতা

তুমি বললে, নীরবতাই প্রেম, পাগলী।

প্রথম তুমি

মেঘের আড়ালে লুকানো চাঁদের লাজ

জমা আছে মায়াবী রাতের বুকে

হয়তো সে অন্ধকার, তবুও চন্দ্রিমা

খুঁজেছে আপন, প্রিয় সে মুগ্ধ, তাকে।

ভয়ে নয়, নির্ভয়ে

ভুলে নয়, নির্ভুলে।

দরজা খুলে প্রথম প্রহরে দেখা

সদ্য ওঠা প্রথমা তিথির প্রথম চাঁদ।

আমার প্রথম, আমিও প্রথম

প্রথম ভুলের প্রথম অস্তরাগ।

ব্যথা নয়, নয় কলুষতা

খোলা চন্দ্রালোকে চেয়ে দেখো

কে কাকে দিয়েছি বেহিসেবি

অনুরাগ, ভালোবাসা।

অতঃপর, মেঘ কেটে যখন হারাবে চাঁদ

মিলিয়ে নিও হিসেবের খাতা

দেখো, জনারণ্যে তুমিও ভীষণ একা।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বিনা মাসুলে রেমিটেন্স পাঠানোর সুবিধা চালু করেছে জনতা ব্যাংক
চেয়েছিলাম ডেমোক্রেসি, হয়ে যাচ্ছে মবক্রেসি: সালাহউদ্দিন আহমদ
গোপালগঞ্জ ইস্যুতে গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে সহযোগিতার আহ্বান সেনাবাহিনীর
যাত্রাবাড়ীতে ৪৮ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার, পিকআপ জব্দ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা