করোনার চেয়েও বেশি খারাপের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি

এম এস নাঈম, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ০৮:০০
অ- অ+

মৃত্যুর হার কম হলেও করোনার চেয়েও অধিক সংখ্যায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। ফলে জনমনে বাড়ছে আতঙ্ক আর ভয়। ইতোমধ্যেই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে দেশের সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

ডেঙ্গু চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কোনো ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে গেলে তাকে যেন ফিরিয়ে না দেওয়া হয় সে বিষয়ে সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশে মোট ৬৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪১০ জন। তবে করোনায় একজনের মৃত্যু হলেও ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ৪১৭ জন ঢাকার বাসিন্দা। ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২০ জন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৩৩ জনে। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ৭৭১ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছেন ৫৬২ জন।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিসের লার্ভা যাতে না জমে সেজন্য গত কয়েকবছর ধরে নগরবাসীকে সচেতন করার পাশাপাশি শাস্তি হিসেবে জরিমানা এমনকি গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো এবং ড্রোনের মাধ্যমে ছাদবাগানগুলোতে পানি জমেছে তাও দেখা হচ্ছে। জমানো পানি দেখা গেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে ড্রেন ও পানিতে ‘নোভাল নিউরন’ ট্যাবলেট ও গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যপক ড. কবিরুল বাশার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ডেঙ্গু এখন উদ্বেগের বিষয়। কোন কোন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি সেই হটস্পটগুলো চিহ্নিত করে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালানো দরকার। ফগিংয়ের মাধ্যমে (মশার ওষুধ ছিটানো) উড়ন্ত মশা মেরে ফেলতে হবে। নইলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে আরও বাড়তে থাকবে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরিচালিত কর্মসূচি যথাযথ নয় উল্লেখ করে ড. কবিরুল বলেন, ‘এতে কোনো কাজে আসছে না। এসব কর্মসূচিতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করে গবেষকদের সমন্বয়ে একটি পরিকল্পিত কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। হটস্পট ম্যানেজমেন্ট করা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের প্রধান কাজ। মশা নিধনে জাতীয় একটি সেল গঠনও জরুরি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫১ জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। তবে ৪০ জেলায় ডেঙ্গুর স্থানীয় সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ হাজার ২৮৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৬ হাজার ৮৮৭ জন। গত ৬ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃত্যু হয় পাঁচজনের, যা চলতি বছরে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পল্লীবন্ধু এরশাদ চিরকাল মানুষের হৃদয়ে কণক প্রদীপ হয়ে জ্বলবেন
চাঁদা না দেওয়ায় পল্লবীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ: গ্রেপ্তার ৩
ছন্দে ফিরলেন লিটন, সমতায় ফিরল টাইগাররা
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৭ কোটি মার্কিন ডলার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা