বিএনপি নেতারা মিথ্যা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে: হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর ২০২২, ১৭:১৮

বিএনপি নেতারা মিথ্যা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আল হানিফ।

তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতারা আজ অনেক সুরে কথা বলেন। সরকার হঠাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন। তারা বলছেন- ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। মানে বাংলাদেশকে পেছনে নিয়ে যাওয়া।

সোমবার চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা আজ অনেক সুরে কথা বলেন। সরকার হঠাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন। তারা বলছেন- ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যাও। হত্যা, খুন ও জঙ্গিদের পৃষ্টপোষকতা করা তাদের পলাতক নেতা তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে চলে গিয়েছিল। এখন আবার খায়েশ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হবার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে বলে জানান হানিফ। বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ৬০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। আমাদের এতো অর্থ ছিল না আমদানির। রিলিফ আনতে হতো। রিলিফ মানেই ভিক্ষা, সাহায্য। বিশ্বের মানুষ আমাদের ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে চিনতো। মধ্যপ্রাচ্যে পরিচিত ছিলাম মিসকিনের জাতি হিসেবে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। মাত্র তিন বছরে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আজ আমরা ভিক্ষুকের জাতি নই; আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিত। আমাদের এই পরিচয় এনে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশকে বিএনপি নেতা কোন পেছনে নিয়ে যেতে চান এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় যখন ছিলেন দেশকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন আপনারা? আপনারা কি আমাদের আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে নিয়ে যেতে চান? মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র বানাতে দেবে না।

আওয়ামী লীগ সরকার রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে, দেশ শেষ করে দিয়েছে- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি) সময়ে দেশের রিজার্ভ কত ছিল? রিজার্ভের কথা বলার আগে লজ্জা হওয়া উচিত। মাত্র মাত্র ৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল। তখন দেশ ধ্বংস হয়নি, আর এখন দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের মাথাপিছু আয় কতো ছিল? ৬০০ ডলারের নিচে আর আজ মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ২৯০০ ডলার। বিএনপির সময়ে রফতানি আয় ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আজ দেশের রপ্তানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

ফরেন রেমিট্যান্স বেড়েছে। চরম দরিদ্র দেশকে বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। এসব উন্নয়ন বিএনপির ভালো লাগে না- বলেন তিনি।

বিএনপির সময়ে বাংলাদেশ কোন অবস্থায় ছিল স্মরণ করার জন্য দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, দুর্নীতির বরপুত্র ছিল তারেক রহমান। যত আন্তর্জাতিক টেন্ডার হতো সবকিছুর কমিশন হাওয়া ভবনে দিতে হতো। কমিশন ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। এই তারেক সন্ত্রাসীদর গডফাদার ছিল। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানিয়ে ছিল। বাংলা ভাইসহ জেএমবির সদস্যরা প্রত্যেকে কাঁদে অস্ত্র নিয়ে পুলিশ প্রটেকশনে প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। দেশকে উগ্র জঙ্গিবাদ, মৌলবাদে চারণভূমি বানিয়েছিল। ২০০৬ সালে বিবিসি অনলাইন এক রিপোর্টে বলেছিল- বাংলাদেশে ছোট-বড় ১২৫টি জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে। জঙ্গিদের অনেকে সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেছিলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তারেক রহমান।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দেশের দুই-এক জায়গা গোলযোগ করে দলের কর্মী মারা যাওয়ার ঘটনায় মির্জা ফখরুল সাহেব কান্না করে বলছেন, সরকার নাকি নির্যাতন করছে। ২০০১-০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র, মানবতা। ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্যাতন করেছেন।

বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কার জন্য মায়াকান্না করেন? ক্ষমতায় থাকতে যে পাপ কাজ করেছেন। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া একটি মামলায় দণ্ড হয়ে কারাগারে। শেখ হাসিনার মানবতায় তিনি এখন বাসায় আছেন। আর এই খালেদাই আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন। হামলা পর বলেছিলেন- শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে। খালেদা জিয়ার মতো নিষ্ঠুর, পিশাচিনী বাংলার মাটিতে আর নেই।

বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতির মূল কাণ্ডারি আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশীদার। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছিল। ৯ মাস যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীনতার একক কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্নত, বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। বাংলাদেশকে চরম দরিদ্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ প্রমুখ।

সম্মেলন উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দীন আহমেদ। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাঈম পাটওয়ারী দুলাল।

ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :