আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যে করে

সোহানা সাবা
 | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:৩৬

আমার ছেলের জন্মের পরপরই পাপা (আমার বাবা) তার বার্থ সার্টিফিকেট তুলে এনেছিল। আমার সেপারেশনের পরে ছেলের পাসপোর্ট তৈরি করতে বার্থ সার্টিফিকেট চাইলাম। আমার গাড়ি, কাপড়, পেপার্স সব ফেলে এক কাপড়ে রাতদুপুরে জান বাঁচাতে পালিয়ে বেরিয়েছিলাম ঘর থেকে।

সেটা দেয়া হলো না, পরবর্তীতে অনেক দৌড়ঝাপ করে পাপা স্বরবর্ণের আরেকটা বার্থ সার্টিফিকেট আনল। লাভের লাভ হলো স্বরবর্ণের পাসপোর্ট ও বার্থ সার্টিফিকেটে ওর স্থায়ী ঠিকানা ওর নানুভাই বাড়ির ঠিকানা হলো।

স্বরবর্ণর তিন বছর বয়সে আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে বললাম, আমি তো কাউকে চিনি না, স্কুলে নাকি বাবা-মায়ের ইন্টারভিউ নেয়, আমি কী করে কী করব তোর ছেলের সঙ্গে স্কুলে ভর্তি করে দিব (আমাদের টার্গেটেড) স্কুলে ফর্ম ছাড়লেই বলিস।

আমার বন্ধু পুরো প্রসিডিওর একা শেষ করে, যখন আমাকে জানালো তখন আমি ছয় দিনের জন্যে কক্সবাজার শুটিংয়ে, এমনকি তার আগেরদিন জানলেও আমি ছেলেকে সেই ‘নামকরা স্কুলে’ ভর্তি করতে ট্রাই করতে পারতাম ঢাকায় থেকে। অভিমান হলো, বুঝলাম সিঙ্গেল হওয়া অপরাধ। সবার ইনসিকিউরিটির কারণ আমি। সব বুঝলাম। অভিমানে, অপমানে বন্ধু লিস্ট থেকে একটা বন্ধুর নাম কাটা গেল। অবশ্য অন্য পক্ষ থেকেও আর রিইউনিয়নের চেষ্টা করা হয়নি আর।

কিছু মানুষ এগিয়ে আসলো, একটা চমৎকার স্কুলের সন্ধান পেলাম (ছেলের সিকিউরিটির কারণে নাম বলছি না)। প্রিন্সিপাল আপা বললেন ছেলে নিজের নাম নিজে বলতে পারলেই ভর্তি নেবে। আমি বললাম তিনি তো দুই বছর থেকে সব ইংলিশ রিডিং করতে পারে। তার ফটোগ্রাফিক মেমরি-কিন্তু ইচ্ছা না হলে তিনি নিজের নাম কাউকে বলবে না। প্রিন্সিপাল আপা এক ঘণ্টা স্বরবর্ণের কাণ্ডকারখানা দেখে আমার ছেলের ফ্যান বনে গেলেন এবং একরকম জোর করে আমার ছেলেকে তার স্কুলে ভর্তি নিলেন।

আমি সবাইকে বলতে চাই যে আমি কতটা লাকি। এই স্কুলে ভর্তি করতে বাচ্চার বাবার নাম লাগে না। এই স্কুলে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত কোনো এক্সাম নাই। এই স্কুলের বেতন আমার সাধ্যের মধ্যে। এই স্কুলের প্রত্যেকটা টিচার প্রত্যেকটা স্টুডেন্টকে পারসোনালি কেয়ার করে। আমি আবার বিশ্বাস করলাম ‘আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যে করে।’

লেখক: অভিনেত্রী

(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এলএম/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :