প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে খেতে চান বানারীপাড়ার সুন্দরী বেগম
‘প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা), আপনি আমার মা। জীবনে আপনার কাছে আর কিছু চাই না। আপনি ঘর দিয়েছেন, জমি দিয়েছেন। আপনার সঙ্গে বসে একটু খেতে চাই। আমার জীবনে আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। আপনার সঙ্গে বসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ভাত খেয়েছিলাম। এবার আপনি বানারীপাড়ায় আসবেন। আপনার সঙ্গে বসে একটু ভাত খাব। এটাই আমার জীবনের শেষ চাওয়া।’
কথাগুলো বলেছেন বরিশাল বানারীপাড়া প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর ঘর ও জমি পাওয়া উপকারভোগী মনোয়ারা বেগম সুন্দরী। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এই উপহার পাওয়ার পর মনোয়ারা এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে ভাত খাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন সাংবাদিকদের কাছে।
বুধবার গণভবন থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর, বরিশালের বানারীপাড়া ও সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বরিশালের বানারীপাড়া থেকে মনোয়ারা বেগম সুন্দরী কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভাত খাওয়ার আবেদন জানান।
মনোয়ারার কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আসবো বানারীপাড়ায়।’
বুধবার এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় ৩৯ হাজার ৩৬৫ পরিবারকে ভূমি ও ঘর দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গণভবনসহ বিভিন্ন প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ১৯৭১ সালে আর্মি আমাদের ঘর বাড়ি পুরিয়ে দিয়েছে। এর পরে আর ঘরে থাকতে পারেনি। তারপর আমার মা ভিক্ষা করে একটা ঘর তুলেছিল। সেই ঘরও বন্যা নিয়ে যায়। এরপরে আর ঘরে থাকতে পারেনি। আজ আপনি ঘর দিয়েছেন। আমি পাকা ঘর পেয়েছি। এটা স্বপ্ন নাকি সত্যি, অবিশ্বাস্য লাগছে।
মনোয়ারা বলেন, ‘বানারীপাড়ার সাধারণ মানুষ আপনাকে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছে। মা, আপনি একবার বানারীপাড়ায় আসুন। বানারীপাড়া গরীব দুঃখী সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা আপনি।’
‘সরকারি ঘর পাওয়া আরেকজন উপকারভোগী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের কোনো ঘর ছিল না। অনেক কষ্ট করে রাস্তার পাড়ে ঝুপড়ি ঘর তুলে আমার বাবা আমাদের নিয়ে জীবনযাপন করছেন। অনেক চেষ্টা করেও আমাদের একটা ঘর তুলে দিতে পারেননি বাবা।’
‘আজ আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে থেকে যে ঘর পেয়েছি এই বিল্ডিং ঘরের স্বপ্নও দেখিনি কোনো দিন। কারণ এমন বড় স্বপ্ন দেখার জন্য পরিস্থিতি লাগে, সেটা আমার বাবার ছিল না, আমারও নেই। আমি দিনমজুরি কাজ করি, এই কাজ করে তো কোনো দিন বিল্ডিং করা সম্ভব না। আজ আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দুই শতাংশ জমির উপরে আমাদের বিল্ডিং করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিশুদ্ধ পানি পান করার ব্যবস্থা ও ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’ বলেন হুমায়ুন কবির।
সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের এই উপকারভোগী বলেন, ‘এখন গ্রামে থেকেও শহরের সুবিধা পাব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা আপনি ঘর দেওয়ায় আমার মেয়েদের নিয়ে আল্লাহর রহমতে ভালো থাকতে পারবো। মা, আপনি আমার সন্তানের ভবিষ্যত করে দিয়েছেন। আমার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যা আমাদের কাছে রাজপ্রসাদের সমান। আপনি না থাকলে আমাদের পক্ষে কোনোদিন সম্ভব হতে না এতো সুন্দর বিল্ডিং পাওয়া, বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া।’
কবির বলেন, ‘জমিতে আমরা শাকসবজি চাষ করে খেতে পারবো। এতে করে আমাদের কষ্ট থাকবে না। আপনি না থাকলে আমাদের এই কষ্ট দূর হতো না। আমি ঘর পেয়েছি শুনে আমার বৃদ্ধা মা আপনার জন্য দোয়া করেছেন। আমিও আপনার জন্য মন থেকে দোয়া করি, আল্লাহ যেন সবসময় ভালো রাখেন এবং দীর্ঘায়ু দান করেন আপনাকে। আমিন।’
(ঢাকাটাইমস/২২মার্চ/জেএ/কেএম)