সৌদিতে নিহত রনির পরিবারে চলছে শোকের মাতম
সৌদি আরবের আসির প্রদেশে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে একজন টঙ্গীর ইমাম হোসেন রনি (৪০)। দুর্ঘটনার খবরে রনির পরিবারে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। তাদের কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে গেছে টঙ্গীর বড় দেওড়ার ফকির মার্কেট এলাকা।
সরেজমিনে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন বড় দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রনির গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে হলেও গাজীপুরের টঙ্গীর বড় দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করেছেন রনি বাবা আব্দুল লতিফ।
রনির বোন সীমা আক্তার জানান, ৫ বছর হল রনি সৌদি আরবে থাকে। দুই মাসের ছুটিতে ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখ তিনি বাসায় আসেন এবং ৭ তারিখ বিয়ে করেন। রনির প্রথম স্ত্রী মলি আক্তার এক সন্তান রেখে তালাক দিয়ে চলে যায়। রনির প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে ইসমাইল হোসেন (১১) স্থানীয় নামা এরাবিক ইনস্টিটিউট নামক মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রথম স্ত্রী তালাক দিয়ে চলে যাওয়ার পর রনির ছেলে ইসমাইল দাদা-দাদির সঙ্গে থাকে। এই অবস্থায় ছুটিতে এবার বাড়ি এসে দ্বিতীয়বার শিমু আক্তারকে বিয়ে করে রনি।
ইমাম হোসেন রনির ভাই হোসেন আলী জসিম জানান, ২৫ মার্চ উমরাহ পালনের জন্য ভাইকে বিমান বন্দর দিয়ে আসি। ঠিকঠাক মত রনি গন্তব্যে পৌঁছে যায়। ওমরাহ পালন শেষে ১ এপ্রিল কাজে যোগদানের কথা ছিল তার। কিন্তু ২৭ তারিখ সৌদিআরবে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
রনির বোন হাজেরা বেগম জানান, আমার ভাইয়ের সাথে শেষ কথা হয় সোমবার ইফতারের ১০ মিনিট আগে। ভাই বলেছিল ওমরাহ শেষে কাজে যোগদান করবে। বাংলাদেশে ইফতারের সময় হয়ে গেছে বলে ফোন রেখে দেয় আমার ভাই রনি। তারপর মৃত্যুর সংবাদ পাই।
রনির বাবা আব্দুল লতিফ জানান, আমার ছেলেকে হারিয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি। সরকারের কাছে আমার আবেদন তাড়াতাড়ি যেন ছেলের লাশটা আমার কাছে পাঠায়।
নিহত রনির ছেলে বুঝে উঠতে পারছে না তার বাবা নেই। কেঁদে কেঁদে শুধু বলছে বাবা মারা গেছেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, লাশ দেশে আসার পর সরকারি নির্দেশনা অনুসারে সকল কাজ সম্পন্ন করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/এসএ)