কেন্দুয়া সূর্যমুখী ফুল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এক তরুণ

আশরাফ গোলাপ, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
  প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ২১:৪৩
অ- অ+

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অন্যান্য ফসলের ন্যায় সূর্যমুখী চাষের জন্যও উপযোগী। কম সময় ও কম অর্থ ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফুলকে সবাই কমবেশি ভালবাসে। কেউ কিনতে, কেউ চাষ করতে আবার কেউ সৌন্দর্য দেখতে। আর এ ফুল যদি হয় শস্য ক্ষেতের সুন্দর হলুদ সূর্যমুখী তাহলে তো কথাই নাই।

এমনি এক চিত্র দেখা যায়, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ১০ নং কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাম্মনজাত গ্রামে। যেখানে প্রতিদিন শতশত ফুলপ্রেমী জড়ো হন সূর্যমুখী বাগানের সৌন্দর্য দেখতে। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলেই এর নাম হয়েছে সূর্যমুখী। কেন্দুয়াতে ২০ শতাংশ জমিতে এই দৃষ্টিনন্দন সূর্যমুখী চাষ করে সারা ফেলেছেন ব্রাম্মনজাত গ্রামের আবুল হাসেম মল্লিকের ছেলে রাফাত হাসান মল্লিক নামে এক তরুণ উদ্যোক্তা।

তিনি সায়মা শাহজাহান একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্র। তিনি বলেন, আমি একজন ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি শখ থেকেই আমার ভাই ও আমার সূর্যমুখী চাষের প্রতি আমার আগ্রহ জন্মে। আর সূর্যমুখী ফুলের চাষে লাভ অনেক বেশি তাই মূলত ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রনোদনা হিসাবে সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও সার দিয়েছেন এবং বিভিন্ন সময় ফুল গাছের রোগবালাই হলে ওষুধসহ সাহায্য ও সুপরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকা আর ফলন ভাল হলে ৪ মণের মত বীজ হতে পারে। ৪ মণ বীজের দাম আশা করছি ১ লাখ টাকা হবে। আমার এই বাগানের নাম দিয়েছি 'মল্লিক সূর্যমুখী বাগান প্রদর্শনী '। ফুলের বাগান দেখতে প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থী ভিড় করছেন। আমার এই সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন সূর্যমুখী চাষ করে উদ্যোক্তা হতে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সূর্যের দিকে মুখ করে আছে ফুল। সবুজের মাঝে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের শোভা উপভোগ করতে বিনামূল্যে নয়, বাগানে ঢুকে নিজেকে রাঙ্গাতে হলে গুণতে হয় মাথা পিছু ২০ টাকা।

সূর্যমুখী ফুলের বাগান ঘুরে দেখতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, সূর্যমুখী ফুল সূর্যের দিকেই মুখ ঘুরিয়ে থাকে। এই জন্য হয়তো তার নাম হয়েছে সূর্যমুখী। বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাই পরিবারকে নিয়ে এখানে আসা। তবে এখানের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর লাগছে তাই সবাই মিলে মনোরম দৃশ্য ফ্রেমে বন্দি করেছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এখানকার চাষিরা। রোগবালাই রোধ ও পরিপক্ক বীজ পেতে জমিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি, জিপসাম ইত্যাদি সার প্রয়োগ করতে হয়। ফুলের প্রতিটি মাথায় বীজের সংখ্যা থাকে ৫০০- ৬৫০ টি। বীজ বপন থেকে পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত ৯০-১১০ দিন লাগে ফসল সংগ্রহ করতে। কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। ২০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রনোদনা হিসাবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। সূর্যমুখী ফুল খুব অল্প পরিশ্রমে চাষ করা যায় এবং রোগবালাই হয় খুবই কম।। এ ফলের বীজ থেকে তেল হয় যা স্বাস্থ্যসম্মত এবং সয়াবিন তেলের উপর নির্ভরতা কমায়। এতে থাকা লিনোলিক এসিড ভাল রাখে হ্নদপিন্ডকেও।

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বাগান যাতে আরো বৃদ্ধি পায় সে জন্য নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে কৃষি বিভাগ থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে ডিএনসিসির কর বকেয়া ৩০ কোটি টাকা
শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ: রফিকুল ইসলাম 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা