বাগেরহাটে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মে ২০২৩, ২০:৫৭

বাগেরহাটের শরণখোলায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী ইলিয়াছ হাওলাদার (৩২) নামে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দশ লাখ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. মঈন উদ্দীন এই রায় ঘোষণা করেন।

আসামির অনুপস্থিতিতে ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবী রনজিত মন্ডল ও মো. ফয়সাল আরেফিন বলেন, ২০১৬ সালে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের মোক্তার খলিফার মেয়ে কমলা নূরীর সাথে একই উপজেলার বকুলতলা গ্রামের মতলেব হাওলাদারের ছেলে ইলিয়াছ হাওলাদারের বিয়ে হয়। কমলা ও তার স্বামী ইলিয়াছ চট্টগ্রামে পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সুখে শান্তিতে তারা সংসার করছিল। তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।

তারা ২০১৭ সালে দুজনে চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামে আসার পর থেকে তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। কমলা নুরীরের ওপর তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সকালে বকুলতলা গ্রামে স্বামী ইলিয়াছের বাড়িতে বসে কমলা নূরীর পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা চেয়ে না পেয়ে ওই দিন নূরীর স্বামী ইলিয়াছ, তার পরিবারের সদস্যরা মিলে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেশলাইকাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছয়দিন পর কমলা নূরীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার ছয়দিন পর ৯ মার্চ নিহতের মামা শাহ আলম হাওলাদার বাদী হয়ে স্বামী ইলিয়াছ হাওলাদার, তার বাবা, মা, ও ননদকে আসামি করে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শরণখোলা থানার তৎকালীন এসআই মো. কবিরুল ইসলাম তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই বছরের ২০১৮ সালের ৩০ জুন ইলিয়াছ ও তার পরিবারের মোট চার সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৪ (১) ধারায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ইলিয়াছকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও নগদ দশ লাখ টাকা অর্থদন্ড দেন। মামলার অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেন বিচারক। প্রধান আসামি ইলিয়াস ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/০২মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :