ছোট ভূ-কম্পন বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ মে ২০২৩, ০৮:১৩| আপডেট : ০৬ মে ২০২৩, ০৮:২৬
অ- অ+

ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় গতকাল ভোরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস-এর হিসেব অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৩। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি-স্থল ঢাকার দোহারে। যার গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। তবে ভূমিকম্পটি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ভূতত্ববিদরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ভূ-কম্পন বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত। ঢাকা ছাড়াও বড় মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে আছে সিলেট ও চট্টগ্রাম। সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ধরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকায় গত কয়েক বছরের মধ্যে যেসব ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশের উৎপত্তিস্থলই ছিল সিলেট বা চট্টগ্রাম অঞ্চলে। এছাড়া অনেকগুলো ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভারতের মিজোরাম বা ত্রিপুরা রাজ্যে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, অনেক সময় ছোট ছোট ভূমিকম্প অনেকদিন ধরে প্লেটের মুভমেন্টের কারণে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। সুতরাং ছোট ছোট ভূমিকম্পের শক্তি যে সংগৃহীত হচ্ছে তার বার্তা বহন করে।

তিনি বলেন, অনেক সময় এই স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তি এবং বার বার সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে সেগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে বড় ভূমিকম্পের আগাম তথ্য দিয়ে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘এর আগে যেসব ভূমিকম্প আমরা লক্ষ্য করেছি, সেগুলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩৫-৪০ কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তি হয়েছে। এই ভূমিকম্পটি সেগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত অনেকটাই অগভীর।’

বিশেষজ্ঞদের হিসেব অনুযায়ী, দেশে আট মাত্রা বা তার চেয়ে বড় ধরণের ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেরকম ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের অন্তত ছয় হাজার ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। এতে অন্তত তিন লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, মজবুত ফল্টে যদি ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে যেটা ঢাকা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাহলে ঢাকার প্রায় ৩০ ভাগ বিল্ডিং ধ্বংস হয়ে যাবে। তার মানে পাকা দালান যেগুলো আছে ৬ লাখের ৩০ ভাগ মানে প্রায় ২ লাখের মতো। সেটা হলে কী পরিমাণ লোক হতাহত হবে সেটারও একটা প্রেডিকশন আছে আমাদের। আমরা বলেছি যে ৩-৪ লাখ হোক হতাহত হবে। হয়ত মারা যাবে ২-৩ লাখ, আহত হবে আরও ২-৩ লাখ। এটাকে হ্যান্ডেল করার মতো ক্ষমতা আমাদের বাংলাদেশের নাই। যদিও সরকার চেষ্টা করছে।

ঢাকার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে, বিদ্যমান উচ্চ ভবনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি দেয়ার দায়িত্ব রাজউকের। তবে সংস্থাটি সেই কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মত এই বিশেষজ্ঞের।

তিনি বলেন, যে বিল্ডিংয়ে মানুষ উঠতে পারবে তার আগে একটা সার্টিফিকেট রাজউক তাকে দিবে যে, তোমার সবকিছু ডকুমেন্ট ঠিক আছে তুমি বাসায় উঠতে পার। অর্থাৎ বিল্ডিংয়ে স্ট্রাকচার নকশা ঠিক আছে, বিল্ডিং ঠিকমতো তৈরি হয়েছে, বিল্ডিংয়ের ফায়ার সেফটি ওকে, বিল্ডিংয়ের ইলেকট্রিক্যাল সেফটি ওকে। এই কয়েকটি সার্টিফিকেটের সংমিশ্রণে রাজউক একটা সার্টিফিকেট দিবে। কিন্তু আমি যতদূর জানি রাজউকের ১০০টির বেশি না, ৬৮টির মতো ওপেন সার্টিফিকেট দিয়েছে। রাজউক এখানে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।

(ঢাকা টাইমস/০৬মে/ আরকেএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস হলেন আয়মন রাহাত
মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনে আগুন
জুলাই সনদ তৈরির প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ: প্রধান উপদেষ্টা
শহীদ জিয়া’র মাজার এলাকায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পরিচ্ছন্নতা অভিযান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা