প্রতীক পেয়ে প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা
এবার খুলনা-বরিশালে ভোটের লড়াই শুরু

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষে খুলনা ও বরিশালে নির্বাচনি লড়াই শুরু হয়েছে। শুক্রবার এই দুই সিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রতীক পেয়ে শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা।
গাজীপুরের মতো এই দুই সিটিতেও নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। যদিও বরিশালে বিএনপির সাবেক মেয়র আহসান হাবীব কামালের ছেলে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। খুলনায় বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো প্রার্থী ভোটে নেই।
আগামী ১২ জুন এই দুই মহানগরে ভোট হবে ইভিএমে। দুই নগরের মধ্যে খুলনায় আওয়ামী লীগের গতবারের বিজয়ী তালুকদার আবদুল খালেককে নৌকা দিলেও বরিশালে পাল্টনো হয়েছে প্রার্থী। সেখানে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
বরিশালে মেয়র পদে প্রার্থী সাতজন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নৌকা, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস লাঙল, ইসলামী আন্দোলনের সৈয়দ মো. ফয়জুল করিম হাতপাখা, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু গোলাপ ফুল নিয়ে লড়বেন।
আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন মার্কা হিসেবে পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি। অপর দুই প্রার্থী আলী হোসেন হরিণ এবং মো. আসাদুজ্জামান লড়বেন হাতি প্রতীক নিয়ে।
শুক্রবার বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। এরপর থেকেই প্রার্থীদের অনেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। অনেকেই জুমার নামাজের পর থেকে গণসংযোগ শুরু করেন।
প্রতীক পেয়ে নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, গাজীপুরের নির্বাচনের কোনো প্রভাব বরিশালে পড়বে না। বরিশালের মানুষ আমাকে সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে জানে। নগরবাসীর আমার প্রতি আস্থা আছে। আমি নির্বাচিত হতে পারলে সিটি করপোরেশনকে উন্মুক্ত করে দেব। সেখানে সব মানুষের পদচারণা হবে। সবাইকে নিয়ে, পরামর্শ করে এ শহরকে গড়তে চাই।
লাঙ্গলের ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, গাজীপুরে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। আমি আশাবাদী বরিশালে আরও বেশি পড়বে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসবে।
টেবিল ঘড়ির কামরুল আহসান বলেন, আমার প্রয়াত বাবা আহসান হাবিব কামাল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে আমি প্রতীক হিসেবে টেবিল ঘড়ি চেয়েছিলাম। আমি বিজয়ের প্রত্যাশা করছি।
নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ প্রার্থীও প্রতীক পেয়ে প্রচারে নেমেছেন। ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটারের জন্য বরিশালে কেন্দ্র থাকবে ১২৬টি। ভোট কক্ষ থাকবে ৮৯৪টি।
এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেকের বিপক্ষে এবার দৃশ্যত শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। এ কারণে ভোট নিয়ে অন্য মহানগরের মতো সেখানে উৎসাহ উদ্দীপনা কম।
এই সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করবেন লাঙ্গল নিয়ে জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু, হাতপাখা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল আউয়াল এবং গোলাপ ফুল নিয়ে জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন।
এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আরও তিনজন। তবে যাছাই-বাছাইয়ে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান, আল আমিন মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী ও সৈয়দ কামরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
ভোটের তফসিল ঘোষণা হলে বিএনপির গতবারের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন গত সিটি নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সরকার নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। অনেকে মনে করেন নির্বাচনে যাতে আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে না পারে, সে জন্য নির্বাচনে যাওয়া উচিত।
তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না জানিয়ে বিএনপির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন নজরুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত ভোটে না আসার বিষয়ে অটল থাকেন। একই সঙ্গে কেউ সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দেয় দল।
এই সিটিতে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের ৩৯ জন প্রার্থীর মধ্যেও বরাদ্দ করা হয়েছে প্রতীক। এই সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার। তাদের ভোট নিতে কেন্দ্র থাকবে ২৮৯টি ভোট। এক হাজার ৭৩২টি কক্ষে থাকবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন।
ঢাকাটাইমস/১৬মে/আরকেএইচ/ইএস

মন্তব্য করুন