বংশীর দূষণে কমছে কৃষিজমি, পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন জেলেরা

সাভার ও ধামরাই এলাকায় বয়ে যাওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী বংশী। এ নদীর দূষণের ফলে কমছে নদীপারের কৃষিজমি। পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন জেলেরা। মূলত বংশী নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য সরাসরি পানিতে ফেলায় দূষিত হচ্ছে নদী। আর এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে নদী পারের জীবন-জীবিকায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইপিজেড, চক্রবর্তী ও গাজীপুর এলাকার কারখানাগুলো কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) ব্যবহার না করে তা সরাসরি নদীতে ফেলছে। এছাড়া রাজফুলবাড়িয়ার তেঁতুলঝোরা এলাকার চামড়া কারখানা থেকে নদীতে সারারাত অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হয়। এর ফলে নদীর পানি কৃষিকাজে আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
নদী পারের মানুষের অভিযোগ, বর্ষার কয়েকদিন ছাড়া সারা বছর নদীতে কোনো মাছ পাওয়া যায় না। তবে দূষণের আগে এই নদীতে সারা বছর বিভিন্ন দেশি মাছ পাওয়া যেত।
নয়ারহাট এলাকার বেলায়েত মাঝি ঢাকাটাইমসকে বলেন, এক সময় এই নদীর মাছ খাইতে যশোর থেকে লোক আসতো। আর এখন এই নদীতে স্রোতও নাই, মাছও নাই।
পাথালিয়া গ্রামের বালু ব্যবসায়ী আবদুল বারেক ঢাকাটাইমসকে বলেন, নদী দূষণের ফলে মাটি এতটাই বিষাক্ত হয়ে গেছে যে আশেপাশের এলাকার ফল ও সবজির স্বাদও নষ্ট হয়ে গেছে। আর নদীর আশেপাশে কৃষিজমি তেমন নাইই।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদের ঢাকা টাইমসকে বলেন, নদী দূষণের কারণে ইপিজেড এলাকায় ফসল অনেক নষ্ট হয়ে যায়। এ পর্যন্ত বেশ কিছু কৃষি কর্মসূচি নিলেও তা তেমন কোনো ফলপ্রসূ হয়নি। কারখানাগুলোর অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলার কারণেই আমাদের কোনো প্রকল্প ফলপ্রসূ হয়না।
সাভার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী হারুন অর রশীদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, জেলেদের থেকে প্রায়ই অভিযোগ আসে তারা মাছ ধরতে পারে না। কারখানার বর্জ্য নদীর পানিকে এতটাই দূষিত করেছে যে সাকার মাছ পর্যন্ত এই পানিতে মারা যায়।
আরও পড়ুন: নবজাতক বিক্রি: শ্রীপুরে সেই হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ
তিনি আরো বলেন, নদীতে এখন মাছ পাওয়া না যাওয়ায় অনেক জেলে পেশা পরিবর্তন করেছেন। আবার অনেকে ছোট-খাট পুকুরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এসএম)

মন্তব্য করুন