ফেনীর তিন নদীর করুণ হাল

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
 | প্রকাশিত : ২৮ মে ২০২৩, ১৭:০০

ফেনীর তিন উপজেলার কৃষি ও জীব বৈচিত্র্য এবং জনজীবন নদীর ওপর নির্ভর থাকলেও পানি শূন্যতার কারণে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষিজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের কপালে।

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানি শুকিয়ে নদী যেন কাঠ। ব্যাহত হচ্ছে অন্তত ১ হাজার হেক্টর জমির বোরোর আবাদ। প্রতি বছর বর্ষায়ও হয় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ হানি।

কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য মতে পানি সংকটের কারণে পরশুরাম কোলাপাড়া, বাঁশপদুয়া, খোন্দকিয়া, বাউরখুমা, বাউরপাথর, বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের টেটেশ্বর, দক্ষিণ টেটেশ্বর, চিথলিয়া ইউনিয়নের কিসমত ঘনিয়া মোড়া, চিথলিয়া, রাজষপুর, শালধর, ধনিকুন্ডাসহ ১০টি গ্রাম ও ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের গোসাইপুর, নিলক্ষী, গাবতলা, বদরপুরসহ ১০টি গ্রামে বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে।

ফুলগাজীর কৃষক সাহাব উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির দিনে বানের পানিতে নদী ফসল ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেলেও ধানের মৌসুমে শুকিয়ে যায়। কোনো কাজেই লাগানো যায় না নদীর পানি।

ফুলগাজী উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ রানা বলেন, পরশুরাম উপজেলায় চলতি বছর ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আর ফুলগাজীতে ৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু নদীর পানি সংকটে অন্তত ১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষি অফিস বলছে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা গেলে এ দুরাবস্থার অবসান হবে।

জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করার সময় স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সমন্বয় করে না। এ সমন্বয়হীনতার কারণে বর্ষায় পানিতে ডুবতে হয়। আর গ্রীষ্মে নদী ফেটে চৌচির হয়ে যায়।

ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলীম বলেন, এক সময় এ নদী এত বড় ছিল সাঁতরে পার হওয়া যেতো না। এখন নদী অনেক ছোট হয়ে গেছে। ধানের মৌসুমে নদী শুকিয়ে একদম কাঠ হয়ে যায়। বৃষ্টির মৌসুমে বন্যার কারণে মানুষের ফসলিহানি হয়। ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নদীর এ দুরবস্থার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়ী। তারা প্রকল্প হাতে নেয় কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে না। সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আকতার হোসেন বলেন, এমনটা কখনও হয়নি নদী একেবারেই শুকিয়ে গেছে। এটি এবারই হয়েছে, এটি অনাবৃষ্টির কারণেই হয়েছে। নদীর নাব্যের কোনো বিষয় নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মুহুরী সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে।

কৃষক ও স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন নদী সংস্কারের মাধ্যমে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা গেলেও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা গেলেই ঘুচবে মানুষের দুঃখ। তা না হলে গলার কাঁটায় পরিণত হবে নদী তিনটি।

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :