অভিনব কায়দায় ইয়াবা বহন, দুই মাদক চোরাকারবারি আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২৩, ১৬:০৭
অ- অ+

পেটিকোটে বিশেষভাবে সেলাই করে এবং ট্রাকের স্পেয়ার চাকায় অভিনব কায়দায় ইয়াবা পাচারের সময় দুই মাদক চোরাকারবারিকে আটক করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ২৫ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. আলমগীর ও মো. শাহজাহান। বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উত্তর বিভাগের উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের তেজগাঁও সার্কেলের একটি টিম বুধবার সকাল থেকে অভিযানে নামে। যাত্রাবাড়ী থানার গোপীবাগের নাহার কিচেনের ২৩/৬/১ নম্বর বাড়ির ডিপিসিয়াস ফুড নামের দোকানের পূর্ব পাশে অভিযান চালোনে হয়। অভিযানে ১০ হাজার পিস ইয়াবাসহ মো. আলমগীর নামে এক আসামিকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য মতে ঢাকার সাভার মডেল থানার হেমায়েতপুর, জয়নাবাড়ী, ঈদগাহ কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর আসামি মো. শাহজাহানকে আটক করা করা হয়। এ সময়ে তার কাছ থেকে ১৫ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়।

ইয়াবা সরবরাহের মূল সমন্বয়ক শাহজাহান

সংবাদ সম্মেলনে মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, শাহজাহান টেকনাফের বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইয়াবা সংগ্রহ করে। পরে ওই ইয়াবা ঢাকার হেমায়েতপুরে তার নিজভাড়া বাসায় ইয়াবা মজুদ করে। পরবর্তীতে রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা পাইকারী মূলে বিক্রি করেন।

পণ্য পরিবহনের আড়ালে শাহজাহান চক্রের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দিতো ট্রাক চালক আলমগীর

রাশেদুজ্জামান বলেন, টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে টেকনাফের বিভিন্ন ইয়াবা কারারির সঙ্গে ট্রাকচালক আলমগীরের সখ্যতা তৈরি করে। টেকনাফের বিভিন্ন ইয়াবা কারবারির নির্দেশ মোতাবেক বিভিন্ন জেলায় ইয়াবা পৌঁছে দেয়াই ছিল তার মূল কাজ। এ কাজের জন্য প্রতি ট্রিপে তিনি এক থেকে দুই লাখ টাকা পেতেন।

চক্রটিকে যেভাবে ধরা হয়:

সংবাদ সম্মেলনে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল উত্তরাঞ্চলের কয়েকজন মাদক কারবারি ঢাকার হেমায়েতপুরে অবস্থানকৃত শাহজাহানের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শাহজাহানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকি এবং তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। পরে বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা জানতে পারি যে, শাহজাহান টেকনাফ থেকে ইয়াবার একটি চালান ট্রাকচালক আলমগীরের মাধ্যমে সংগ্রহ করবে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ থেকে ট্রাকচালক আলমগীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৌঁছালে যাত্রাবাড়ী এলাকার গোপীবাগে ট্রাকটির গতি রোধ করি এবং তাকে শনাক্ত করি।

আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ট্রাকের স্পেয়ার চাকার টিউবের মধ্যে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় বিপুল পরিমান ইয়াবা রয়েছে। তার দেওয়া তথ্য মতে স্পেয়ার চাকার টিউবের মধ্য থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা অন্যদিকে ট্রাকচালক আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া যায়। তার দেওয়া তথ্য এবং আগের পাওয়া তথ্য যাচাই করে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানার হেমায়েতপুর, জয়নাবাড়ী, ঈদগাহ কবরস্থান এলাকায় শাহজাহানের ভাড়াকৃত বাসায় অভিযান পরিচালনা করে বিশেষ কায়দায় পেটিকোটে সেলাই করা অবস্থায় বিভিন্ন মাদক কারবারির কাছ থেকে সরবরাহের জন্য মজুদকৃত ১৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান জানায়, নারীদের ব্যবহার করে ইয়াবা পাচারের সুবিধার জন্য এই বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে থাকে। প্রাথমিকভাবে আসামি শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তার নামে এর আগেও দুইটি মাদক মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার মো. আলমগীর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার মো. ইউসুফ আলীর ছেলে আর মো. শাহজাহান ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার মো. শামসুল হকের ছেলে।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/এএ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দেশে নতুন করে আর যেন কোনো স্বৈরাচারের জন্ম না হয়: নাহিদ ইসলাম
BUBT Bids Farewell to Lecturer Arifa Akther as She Embarks on PhD Journey in the USA
শ্রীলঙ্কাকে ১৫৫ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ
পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা