মসজিদে ধান শুকানোয় মুসল্লিদের ক্ষোভ, ভেতরে ধান রেখেই বাইরে তালা

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০২৩, ২২:৫৭
অ- অ+

চাঁদপুর সদর উপজেলায় একটি মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে দিয়ে ৬ দিন ধরে ধান শুকানোর অভিযোগ উঠেছে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকার মুসল্লিরা ক্ষুব্ধ মসজিদের ভেতরে ধান রেখেই দরজায় অতিরিক্ত তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন এলাকার ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা।

উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের উত্তর মৈশাদী গ্রামে বাইতুন নুর নামের একটি জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মসজিদটিতে বিগত ৪ দিন ধরেই একটানা থাকা সিলিং ফ্যান চালিয়ে ফ্লোরের মধ্যে ধান বিছিয়ে শুকাচ্ছেন মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের মো নুরুল ইসলাম খান। যার কারণে বিগত ৬ দিন ধরে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে না পেরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উক্ত মসজিদটিতে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত বন্ধ থাকায় উত্তোজিত মুসল্লি ও এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করে মসজিদে ২য় তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

সরজমিনে বুধবার (১৪জুন) গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর মৈশাদী গ্রামের চাঁন খান মিয়া বাড়ির আঙ্গিনা থাকা বাইতুর নুর জামে মসজিদের দুটি গেটেই তালা ঝুলে আছে। ভেতরে চলছে কয়েকটি সিলিং ফ্যান। নিচে ফ্লোরের মধ্যে পাটি বিছিয়ে শুনানো হচ্ছে ধান। মসজিদের প্রবেশের কোন প্রকার বিকল্প ব্যবস্থা নেই।

স্থানীয় এলাকার সোহেল গাজী, সাত্তার মোল্লা, শফিক গাজী, মোস্তফা গাজী, আরশাদ মজুমদার, মাইনুদ্দিন ঢালী, মিন্টু গাজী, মতিন গাজী সহ একাধিক ব্যক্তি ও মুসল্লিরা জানান, মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের মৃত আহম্মদ খানের (চাঁন খান) ছেলে নুরুল ইসলাম খান গত শুক্রবার দিন মসজিদের ভেতরের ফ্যান চালিয়ে ফ্লোরের মধ্যে ধান শুকাতে দেন। যার কারণে তারা বিগত ৬ দিন ধরে ওই মসজিদে ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারেননি। যার কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি স্থানীয় চেয়াারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীকে অবগত করে তারা মসজিদে আরেকটি তালা লাগিয়ে দেন।

তারা জানান, প্রায় তিন বছর পূর্বে বিমান বাহিনীর ক্যাপ্টেন আরমান উল্লাহ চৌধুরীর অনুদানে সেখানে বায়তুর নূর জামে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকেই নুরুল ইসলাম খান নিজের খাম খেয়ালী ও ইচ্ছামত মসজিদে যা খুশি তাই রাখেন। এ নিয়ে মুসল্লি এবং এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে তিনি তাদেরকে বলে দেন, ইচ্ছে হলে কেউ মসজিদে নামাজ পড়বে। যাদের ইচ্ছা হবেনা তারা এই মসজিদে নামাজ পড়বে না। এমন কথা বলেই তিনি মুসল্লিদেরকে ওই মসজিদে নামাজ আদায় না করার জন্য বারণ করেন। তারপর থেকে বিগত এক বছর ওই মসজিদে তারা নামাজ পড়তে পারেননি বলে জানান।

এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মসজিদটি আমার ছোট ভাই বিমান বাহিনীর সদস্য হাফেজ ফরিদুল ইসলাম মিজান এবং বিমান বাহিনীর এক ক্যাপেন্টের অনুদানে প্রায় ২ আড়াই বছর আগে নির্মাণ করেন। এটার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছি আমি। আমি কাউকে এই মসজিদে নামাজ পড়ার বিষয়ে বারণ করিনি। তিনি বলেন, ধানগুলো আমি ছাদে শুকাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু দুদিন টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমার ছেলেকে বলেছিলাম মসজিদের এক কোণে ধানগুলো মেলে দিতে। তিনি মসজিদের ভেতরে ধান শুকানোর বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আসলে এ কাজটি আমার ঠিক হয়নি। কিন্তু এখন এলাকার লোকজন আরেকটি তালা মারার কারণে আমি ধানগুলো বের করতে পারছি না।

এ বিষয়ে মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, মসজিদে ধান শুকানোর বিষয়টি এলাকার লোকজন আমাকে জানিয়েছে। আমি তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি মসজিদে আরেকটি তালা লাগিয়ে দিতে। এরপর বর্তমান কমিটি বাদ দিয়ে নতুন করে একটি মসজিদ কমিটি গঠন করে দিয়ে তালা খুলে দেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে ডিএনসিসির কর বকেয়া ৩০ কোটি টাকা
শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ: রফিকুল ইসলাম 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা