বোয়ালমারীতে পুলিশি বাধায় বিএনপির কর্মীসভা পণ্ড

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে উপজেলা বিএনপির যৌথ কর্মীসভা পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্যে করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। এতে সংবাদকর্মীসহ ১২ জন আহত হন।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পৌর সদরের পাঞ্জারী একাডেমির প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কামাল মিয়ার সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান (মাশুক), বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ আফসার উদ্দিন প্রমুখ।

জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরদলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের উদ্দ্যেশে এ সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় জেলা নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতে সকাল ১০টায় কর্মীসভা শুরু হয়। এসময় পুলিশ সভাটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। এতে আগত নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ১০ মিনিট সময় বেধে দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীরা তর্কে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ হালকা লাঠিচার্জ করে। এসময় সভার বাইরে থাকা দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী শ্লোগন দিতে থাকলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশকে লক্ষে করে ইট-পাটকেল ছুড়লে ঢাকা টাইমসের বোয়ালমারী প্রতিনিধি আমীর চারু বাবলুসহ কয়েকজন পুলিশ সামান্য আহত হন। এসময় সভাস্থলে থাকা নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠিচার্জে বোয়ালমারী সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, যুবদল নেতা ইমরান হোসেনসহ বেশ কয়েজন নেতাকর্মী আহত হন। তাদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান বিএনপি নেতা খন্দাকর নাসিরুল ইসলাম।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বিএনপি কর্মীসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় তাদেরকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলা হলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান চালিয়ে গেলে সভাটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই পুলিশ কাজ করেছে। সেখানে কাউকে লাঠিপেটা করা হয়নি।

সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম জানান, একটি দলের ইঙ্গিতে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালায়। যুগপদ আন্দোলন তৈরি লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের উদ্দ্যেশে আমরা কর্মী সমাবেশ আয়োজন করেছিলাম। একটি গোষ্ঠীর ইঙ্গিতে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, পুলিশের থেকে পূর্ব অনুমতি নেওয়ার পরেও আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে সভা। পুলিশের লাঠিচার্জে আমাদের নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দ জানাই।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এসএ)