আবারও বেড়েছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি, বন্যা আতঙ্কে ২০ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২৩, ১৮:১৬

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার যাদুকাটা, চেলা, সুরমাসহ সবকটি নদ-নদী ও হাওরে আবারও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার নিন্মাঅঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদে বাড়ি থেকে কর্মস্থল ফেরত মানুষসহ এলাকাবাসী।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলার সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের কাজির পয়েন্ট, জামাইপাড়া, নতুন পাড়া, কালিবাড়ি, আরপিননগরসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, মধ্যনগরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট।

উপজেলায় ও সীমান্ত এলাকার সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর শহরের নিম্নাঞ্চলের পাঁচটি উপজেলার রাস্তাঘাট। ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সব এলাকার পাঁচ-ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। একই সঙ্গে পানি বাড়তে থাকায় বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভাটির জেলার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।

জেলা শহরে আসতে গিয়ে কোনো কোনো সড়কে মানুষজন নৌকা দিয়ে পাড়া পার হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার জেলার হাওর পাড়ে ও সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী কয়েক লক্ষাধিক মানুষ গত বছরের বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছে।

আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে স্বল্প মেয়াদী বন্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মধ্যনগর উপজেলার মহেষখলা গ্রামের বাসিন্দা অজিত কুমার জানান, মেঘালয় পাহাড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢলের পানি মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার সড়ক উপচে প্রবলবেগে হাওর এলাকায় প্রবেশ করছে। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে বন্যার আতঙ্কে আছি।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের (সীমান্ত এলাকার) বাসিন্দারা সাদ্দাম হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে বড়ছড়া বাগলী সড়কের কয়েকটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়াও এই সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। পানি সীমান্ত এলাকায় বাড়ছে।

জরুরি প্রয়োজন তাহিরপুর উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসা জসিম উদ্দিন জানান, জেলার সাথে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলাসহ কয়েকটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও জেলার হাওর পাড়ের সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে ভেঙে কষ্ট করে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে পৌঁছাতে হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আরও বাড়তে থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে। তবে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা মজুদ রয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :