আখাউড়া রেল স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে র্যাম্প নির্মাণের দাবি

পূর্বাঞ্চল রেল পথের অন্যতম বড় রেলওয়ে জংশন আখাউড়া স্টেশনে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যেতে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এতে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। ফলে প্রতিবন্ধী যাত্রী ও শিশুদের নিয়ে প্ল্যাটফর্ম পারাপারের ভোগান্তি রয়েই যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ফুট ওভারব্রিজে র্যাম্প নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে আখাউড়া-লাকসাম রুটে ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসাবে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন, নতুন প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ, রেল ট্র্যাক স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
জানা গেছে, এ জংশনে প্ল্যাটফর্ম পারাপারে যাত্রীদের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর দৈঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট ও উচ্চতা ৩০ ফুট। প্রায় ৫০ ফুট লম্বা সিঁড়ি হেটে যাত্রীদের ওভারব্রিজে উঠতে হবে।
এছাড়া ওই ব্রিজে উঠা-নামার জন্য দুই পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনো র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এতে শারীরিক প্রতিবন্ধী, অসুস্থ, বৃদ্ধ যাত্রীদের প্ল্যাটফর্ম পারাপারে ভোগান্তি রয়ে যাচ্ছে। যদিও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ভৌত অবকাঠামো, যানবাহন, যোগাযোগসহ জনসাধারণের পাওয়া সব সুবিধা ও সেবাসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমান সুযোগ প্রাপ্তির অধিকারের কথা বলা রয়েছে।
শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দুজন নারী শিশু কোলে নিয়ে রেল লাইনের ওপর দিয়ে এ প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছেন। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ঝুঁকি নিয়ে প্ল্যাটফর্ম পারাপার হচ্ছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ব্রিজের দুই পাশে সিঁড়ির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন আর র্যাম্প করার সুযোগ নেই।
স্টেশনে এক নারী যাত্রী ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমার ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে এতগুলো সিঁড়ি পার হয়ে ওভারব্রিজ দিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই রেল লাইন দিয়ে হেটে পার হয়েছি। সমতল সিঁড়ি থাকলে খুব সুবিধা হতো।
শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. নায়েব আলী নামে এক যাত্রী ঢাকা টাইমসকে বলেন, সমতল সিঁড়ি হলে প্রতিবন্ধীদের খুব সুবিধা হতো। এখন যে সিঁড়ি করা হয়েছে তা দিয়ে আমাদের চলাচল করা সম্ভব না। আখাউড়া পৌর শহরের চন্দনসারের বাসিন্দা লেখক আলী মাহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে রেলওয়ের আধুনিকায়ন কাজ করা হচ্ছে। অথচ আখাউড়ায় ওভারব্রিজে কেন র্যাম্প রাখা হলো না তা বুঝতে পারছি না। অসুস্থ, প্রতিবন্ধী যাত্রীরা কিভাবে ব্রিজ দিয়ে পারাপার হবে। বিষয়টি খুবই অমানবিক।
আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম ঢাকা টাইমসকে বলেন, আখাউড়া স্টেশনে ওভারব্রিজে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়নি। বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য র্যাম্প সিঁড়ি খুবই দরকার। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেছি।
আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুভক্ত গীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, আখাউড়া স্টেশনের ওভারব্রিজের প্ল্যানে র্যাম্প রাখা নেই। এ বিষয়ে আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা পরামর্শক ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে পর্যালোচনা করে দেখব; এটা করা যায় কিনা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ভাসছে ১৮৫ গ্রামের ৬২ হাজার মানুষ, বিশুদ্ধ পানির সংকট
উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এসএম)

মন্তব্য করুন