ভারী বর্ষণে রাঙামাটিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৬৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পলাশ চাকমা, রাঙ্গামাটি
| আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৫:৩৪ | প্রকাশিত : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৫:১৬

এক সপ্তাহ ধরে অতিবৃষ্টিতে বেশ কয়েক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে ডুবে গেছে এবং পাহাড়ের মাটি ধসে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া টানা ৭দিনের বর্ষণে জেলার ৯টি উপজেলায় ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ের পাশে মাটি সরে গিয়ে দেয়াল এবং পিলারে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোনো বিদ্যালয় এখনো পানিতে ডুবে আছে। এতে ঝুঁকিতে আছে জেলার ৬৪টি বিদ্যালয়।

শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় মোট ৭০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে এরমধ্যে রাঙ্গামাটির ৯ উপজেলায় মোট ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিতে রয়েছে। বেশ কয়েক একটি বিদ্যালয় নিম্নাঞ্চলে হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে এবং টানা বর্ষণে বিদ্যালয়ে আশে পাশে পাহাড় ধস হওয়ায় কিছু বিদ্যালয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।

এরমধ্যে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় ৮৯টির মধ্যে ৮টি, কাউখালী উপজেলায় ৬৩টির মধ্যে ৪টি, নানিয়ারচর ৭২টির মধ্যে ৪টি, বরকল ৮৩টির মধ্যে ৭টি, জুরাছড়ি ৬১টির মধ্যে ১১টি, বাঘাইছড়ি ১১৬টির মধ্যে ১৪টি, কাপ্তাই ৫৩টির মধ্যে ১টি, রাজস্থলী ৫৩টির মধ্যে ১০টি এবং বিলাইছড়ি ৪৩ টির মধ্যে ৯টি সহ মোট ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে, রাজস্থালী উপজেলার লংগদু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছায়ক কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, টানা বর্ষণের ফলে বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা ও মাঠ ধসে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়ের পিলারে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। অনতিবিলম্বে এ ধস থেকে রক্ষা করতে এখানে একটি গার্ড ওয়াল নির্মানের দাবি জানান তিনি।

রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার পুলিশ লাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিংকোচি মগ জানান, ২০১৭ সালের পাহাড় ধসের সময় তাদের বিদ্যালয়ের একটি ভবনের পিছন দিকে ধসে পড়ে। ঐ সময় মাটির বস্তা দিয়ে কোনো রকম সংস্কার করা হয়। এবার টানা বর্ষণে একই জায়গায় আবার ধসে পড়ে। ফলে বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ধস হওয়া জায়গায় একটি রিটেনিং ওয়াল দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

একই উপজেলার পুলিন বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপিন চাকমা জানান, তার বিদ্যালয়ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে আছে। টানা বৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের একপাশে ছোট ধস হয়েছে। তাই একটি রিটেনিং ওয়াল দেওয়ার জন্য তিনি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন।

বড়াদম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিপি চাকমা জানান, ২০১৭ সালের পাহাড়ধসের কারণে বিদ্যালয়ের দুইদিক থেকে মাটি সরে গেছে, খুঁটি দিয়ে সাময়িকভাবে সংস্কার করা হলেও এবার টানা বর্ষণে একই জায়গায় আবার ধসে পড়েছে। এতে ঝুঁকিতে আছে বিদ্যালয়। যদি ধসে যাওয়া স্থানে গার্ড ওয়াল দেয়া না,তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অপরদিকে, জুরাছড়ি উপজেলার জাম্বুরাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শীলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখানো পানিতে ডুবে আছে।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তথ্যমতে, অতিবৃষ্টির কারণে এ পর্যন্ত জেলার ৬৪টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কিছু কিছু বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে গেছে এবং কিছু কিছু বিদ্যালয়ের পাশে মাটি সরে গিয়ে ভবনের দেয়াল এবং পিলারের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তালিকা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। শিক্ষা অধিদপ্তর বরাদ্দ দিলে বিদ্যালয়গুলো মেরামতের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইম/১২ আগস্ট/ ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :