লামিমা’র শুভ বিয়ে

আজকে আমার আদুরে কন্যা লাজুকলতা লামিমা’র শুভ বিয়ে,
আজ তাকে দিতে হবে বাঙ্গালি বধুর যোগ্য সাজে সাজিয়ে।
আজ সারা পৃথিবীর আনন্দ-অবগাহন হর্ষের হিল্লোলে;
আজ ওর মৃদু পায়ে শুভযাত্রা জীবনের দ্বিতীয় মঞ্জিলে।
.
তার পথচলা পুষ্পপেলব হউক; শুভার্থীদের একই আরাধনা।
নিত্যকার রীতিমতে আজকের ভোরের যে উদাত্ত ঘোষণা-
‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’,
চোখ থেকে আচকা কেড়ে নেয় আলসেমির ঘুম।
.
উষ্ণতার সঙ্গে উৎকণ্ঠার আনাগোনায় আজ সময়ের আগেই-
হাজার প্রশ্নের ভিড়ে নিদ্রালেশ কেটে গেছে অতি পূর্বরাগেই।
কর্পূরের মতো নিরুদ্দেশ হলো ওর আশৈশবের বিছানার ওম,
আজ থেকে প্রাত্যহিকতার ধাঁচ বদলে যাবে নিত্য বেমালুম।
.
আজকের প্রথম আলোর কিরণের আছে যে বিশেষ মহিমা;
আজ তার জীবিন-বৃত্তে অসীমের মাঝে হবে সসীমের সীমা।
আজকের জগরণে অভাবিত বাস্তবতাকে হবে চেনা-জানা,
বদলে যাবে পরিচিত পরিসর, তার প্রিয় আজন্ম ঠিকানা।
মোরগের কুককুরুতে, পাখিদের কলতানে আজকের যে সূর্যোদয়,
তা-ও কিন্তু আর দশটা সাধারণ দিনের মতো নয়।
পুরানোকে পিছে ফেলে নতুনের আহ্বানে দিতে হবে সাড়া,
লঙ্ঘন সাধ্যাতীত জীবন পরিক্রমার এই অনিবার্য ধারা।
.
এ সকাল আজ তাকে হাত ইশারায় ডেকে অরুণিম অভ্যর্থনায়,
নির্দয় হাতে তুলে দেবে ‘জীবন উপন্যাস’-এর এক নতুন অধ্যায়।
যে কাহিনী রাজকন্যা ও রাজকুমারের রূপকথাতেই মানায়,
সপ্তডিঙ্গা ভরা থাকে সোনারূপা, মণিকাঞ্চন পারিজাত কানায় কানায়।
.
তবে সে কাহিনীর মোড়ে মোড়ে থাকতে পারে আপদের মহাগ্লানি,
পদে পদে থাকতে পারে শংকা, উদ্বেগ, বিপাকের হাতছানি।
বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে যদি সহযাত্রি মিলে যায় যোগ্য বন্ধুর মতো,
চলার পথের কাঁটার ঘায়েও পথিকের পা থাকে অবিচল অক্ষত।
.
সুখ আর শোক, অনন্দ-বিষাদ, দুজনেই যদি সমহারে
ভাগ করে নেয়; তবে সেই সুখই স্থায়ী হতে পারে সংসারে।
পৃথিবীর সব কন্যার ছবি আমার কন্যার মাঝে দেখি,
কন্যা যখন নেয় বধূবেশ; বধুবরণের কথা লেখি।
.
সকল কন্যার মুখে যেন থাকে সুখের হাসির লালিমা!
জীবনসঙ্গীর কাছে হোক তারা সকলে তিলোত্তমা।
কোন কন্যার কাছে না ঘেঁষুক জগতের কোন কালিমা,
সব কন্যারই প্রতীক আমার স্নেহের কন্যা লামিমা।

মন্তব্য করুন