কলেজে ভর্তি হতে না পারায় আত্মহত্যার চেষ্টা, প্রাণ বাঁচালেন ওসি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ২১:৩৩
অ- অ+

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার এক ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি (ভোকেশনাল শাখা) থেকে উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে কলেজে ভর্তি হতে না পারায় রাতের আঁধারে সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন ওই ছাত্র।

এদিকে প্রতিদিনের মতো উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতের বেলায় ওই পথে টহল দিচ্ছিলেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক। দূর থেকে গাড়ির আলোয় দেখতে পান কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। তখন ওসি দ্রুত গাড়িটি ওই ছাত্রের সামনে দাঁড় করায়। ওসি গাড়ি থেকে নেমে ওই ছাত্রকে রাস্তার পাশে নিয়ে তার প্রাণ বাঁচান।

ওই ছাত্রের মা-বাবা বলেন, কিছু দিন আগে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় এ-প্লাস পেয়ে পাশ করেছে। ছেলের পাশের খবর শুনে বুকটা আনন্দে ভরে গেলেও ছেলে কলেজে ভর্তি করে দিতে না পারার দুঃখে আমরা হতাশায় দিন পার করছিলাম। সেদিন ছেলে এসে বললো মা আমি কলেজে ভর্তি হব টাকা দিবে না? তখন আমি একটু রাগ করেই বলেছিলাম তোর পড়শোনা করা লাগবিনা, তুই কাজ কাম করেক। তোকে আর পড়াশোনা করা লাগবেনা। এই বলে ছেলেও মন খারাপ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। রাতের বেলায় কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল। ওই রাস্তা দিয়ে পাঁচবিবি থানার ওসি যাওয়ার সময় আমার ছেলের প্রাণ বাঁচায় এবং পরের দিন সকালে আমাদের থানায় দেখা করতে বলে। সকালে থানায় গেলে আমাদের নাস্তা করে বলেন আপনাদের ছেলের কলেজের ভর্তি খরচ আমি নিলাম। এই শুনে চোখ দিয়ে আমাদের আনন্দের জল চলে আসে। ভগবান মানবিক এই ওসির ভালো করুক। ছেলে এখন কলেজে যাচ্ছে।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় কাজ করছেন পুলিশ। সেদিন রাতে পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাগজানা এলাকায় টহলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই গাড়ির আলোয় দেখতে পাই কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। তখন চালককে দ্রুত গাড়ি চালাতে বলি আর অবশেষে ছেলেটার সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালে ছেলেটি ভয় পায়।

তিনি আরও বলেন, পরে ছেলেটির কাছ থেকে আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে সে বলে এবছর জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেছে কিন্তু পরিবারের অভাবের কারনে সে কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। এ কারণে হতাশায় নিজের জীবন শেষ করে দিতে চায়। রাতের বেলায় ছেলেটাকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে সকালে মা-বাবাকে নিয়ে থানায় আসতে বলি। এদিকে বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যারকে জানালে তিনি ছেলেটার কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই ছেলেকে কলেজে ভর্তি করে দিয়েছি। এখন থেকে ওর দায়িত্ব আমরা পাঁচবিবি থানা পুলিশ নিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে ডিএনসিসির কর বকেয়া ৩০ কোটি টাকা
শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ: রফিকুল ইসলাম 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা